জনপ্রিয়তা পেয়েও যৌনকর্মী হতে বাধ্য হন এই অভিনেত্রী!

চাকচিক্য, খ্যাতি আর গ্ল্যামার। রুপালি জগতের অভিজাতপূর্ণ জগতের আড়ালে লুকিয়ে থাকে অচেনা অন্ধকার, যা চোখে পড়ে না সাধারণ দর্শকের। দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নিশা নূরের জীবনে সেই আলো-অন্ধকারের মিশ্রণই যেন স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। একসময় সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছালেও শেষমেশ করুণ মৃত্যুই হয়েছিল তাঁর নিয়তি।

নিশা নূর ১৯৬২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তামিলনাড়ুর নাগাপত্তিনাম (নাগুর) এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। আশির দশকে তামিল সিনেমা ‘মঙ্গলা নায়াগি’ দিয়ে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর একে একে ‘চুভাপ্পু নাডা’, ‘মিমিক্স প্যারেড’, ‘আইয়ার দ্য গ্রেট’, ‘দেবাসুরম’, ‘ইলামাই কোলাম’, ‘এনাক্কাগা কাথিরু’সহ বহু ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।

একসময়কার তুমুল জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী দক্ষিণী ছবির দুই কিংবদন্তি তারকা রজনীকান্ত ও কমল হাসানের সঙ্গেও কাজ করেছেন।

কমল হাসানের ‘টিক টিক টিক’, রজনীকান্তের ‘শ্রী রাঘবেন্দ্র’ এবং বালাচন্দর পরিচালিত ‘কল্যাণ অগতিগল’-এর মতো বিখ্যাত ছবিতে দর্শক তাঁকে পেয়েছেন। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে ক্যারিয়ার দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ধীরে ধীরে কাজের সুযোগ কমতে থাকে, আর্থিক টানাপড়েন চরমে পৌঁছে যায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, সেই দুর্দিনে পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধবও পাশে দাঁড়াননি।

উল্টো এক প্রযোজকের চাপে তাঁকে বাধ্য হতে হয় যৌনপেশায় নামতে। এখান থেকেই শুরু হয় জীবনের ভয়াবহ দুঃসময়। পরে তাঁর শরীরে ধরা পড়ে এইচআইভি (এইডস)।

এইডস আক্রান্ত এ অভিনেত্রীকে শেষদিকে প্রায় চেনাই যেত না। অতিমাত্রায় রোগা, কঙ্কালসার দেহ নিয়ে নিঃসঙ্গ জীবন কাটছিল তার।

২০০৭ সালে চেন্নাইয়ের এক দরগাহর বাইরে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় নিশাকে। পরে ‘মুসলিম মুনেত্রা কাজাগম’ নামের একটি তামিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই মৃত্যু হয় নিশার।

আজও নিশা নূরের নাম উচ্চারিত হয় দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক ট্র্যাজিক কাহিনি হিসেবে। যিনি রজনীকান্ত ও কমল হাসানের মতো মহাতারকার সঙ্গে কাজ করেও শেষপর্যন্ত জীবনের শেষ দিনগুলোতে লড়েছেন একা ও অসহায়ভাবে! পাশে পাননি কাউকে।

টিকে/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে একাত্তরের ইস্যুর সমাধান চাইল এনসিপি Aug 24, 2025
গাজায় বেঁচে থাকা শিশুদের এখনো সুযোগ আছে: মেলানিয়াকে তুর্কি ফার্স্ট লেডির চিঠি Aug 24, 2025
আমি হতাশ হতে চাই না, তারপরও হতাশ হতে হচ্ছে: মির্জা ফখরুল Aug 24, 2025
মস্কোর রেড স্কোয়ারে জমজমাট স্পাসকায়া টাওয়ার উৎসব Aug 24, 2025
img
আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত: জোনায়েদ সাকি Aug 24, 2025
img
মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, শিক্ষার্থীদের ৩ দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা Aug 24, 2025
img
৪৫ বছর ভাত না খেয়েও সুস্থ জীবনযাপন বিপ্লবের Aug 24, 2025
img
বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ৪ জনের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার Aug 24, 2025
img
জনগণ যেদিকে চায় বিএনপি সেদিকে থাকবে : মোস্তফা জামান Aug 24, 2025
img
পাবনায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ গেল ইউনিয়ন যুবদল নেতার Aug 24, 2025
img
বিদেশে পালানো নেতাদের নির্বাচনে ফেরার পথে বাধা : জাহেদ উর রহমান Aug 24, 2025
img
উগান্ডার সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি নিয়ে তীব্র বিতর্ক Aug 24, 2025
img
নির্বাচন হলে বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশের ওপরে সিট পেয়ে ক্ষমতায় আসবে : ফজলুর রহমান Aug 24, 2025
img
মেলানিয়া ট্রাম্পকে চিঠি দিলেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি Aug 24, 2025
img
ছবি রিলিজের টেনশন ভুলতে স্ট্রিট ফুডে মজলেন সিদ্ধার্থ-জাহ্নবী Aug 24, 2025
img
ফের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা, সীমান্তে বিজিবির সতর্কতা Aug 24, 2025
img
শোকজ নোটিশ প্রত্যাহার, এনসিপির সাংগঠনিক কাজে ফিরছেন তুষার Aug 24, 2025
img
৩ দিনের মধ্যে নিজ খরচে সাদাপাথর ফেরতের নির্দেশ Aug 24, 2025
img
এশিয়া কাপের দলে শান্ত-নাঈম কেন নেই, ব্যাখ্যা দিলেন লিপু Aug 23, 2025
অপু বিশ্বাসের স্টাইলিশ কামব্যাক, ভক্তরা বলছেন "অপূর্ব!" Aug 23, 2025