কারাগারগুলো থেকে নগদ টাকা মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) কারা সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত এক বছরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
আইজি প্রিজন বলেন, “অবস্থা আগের তুলনায় অনেকটাই উন্নত হয়েছে, তবে পুরোপুরি সমস্যা শেষ হয়নি। মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এক হাজারের বেশি অভিযান চালানো হয়েছে এবং বিপুলসংখ্যক ছোট সাইজের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। কারাগারে ইয়াবা প্রবেশের ঘটনা রয়েছে, বিশেষ করে চট্টগ্রামে বেশি ধরা পড়ছে। মাদক মামলায় গ্রেপ্তারদের বিশেষ সেলে রাখা হচ্ছে যাতে তারা মাদক ছড়িয়ে দিতে না পারে।”
তিনি আরও জানান, মাদকসহ জড়িত কারারক্ষীদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনের অপব্যবহার রোধে ডিভিশন বাতিলসহ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কারাগার ও কাশিমপুরে বাসা থেকে রান্না করা খাবার প্রদানও বন্ধ করা হয়েছে।
পলাতক বন্দিদের বিষয়ে তিনি জানান, ৫ আগস্টে ২,২০০ জন বন্দি পালিয়ে যায়; বর্তমানে ৭০০-এর বেশি বন্দি এখনও পলাতক, এর মধ্যে ৯ জন জঙ্গি এবং ৬০ জন মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত। অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার কার্যক্রম চলছে।
নারী বন্দিদের যাতায়াত সমস্যা সমাধানে কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগার নির্মাণ হচ্ছে। বিশেষ কারাগারে নারী বন্দিদের জন্য আলাদা সেল খোলা হবে।
বন্দিদের ফোন ব্যবস্থার বিষয়ে আইজি প্রিজন বলেন, প্রতি সপ্তাহে ৫ মিনিট করে কথা বলার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে অপব্যবহার রোধে অটোমেশন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। কেরানীগঞ্জ কারাগারে ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কারাগারে কম্প্রিহেন্সিভ জ্যামিং সিস্টেম ধাপে ধাপে স্থাপন করা হচ্ছে। প্রথমে স্পেশাল জেল ও কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে শুরু হবে।
কারাগারে খাবারের মান নিয়ে তিনি বলেন, “পরিমাণ ও প্রাপ্য বিষয়ে অভিযোগ নেই। প্রোটিন বরাদ্দ বৃদ্ধির মাধ্যমে বন্দিদের পুষ্টি নিশ্চিত করা হচ্ছে। রান্না নিয়ে কিছু অভিযোগ থাকতে পারে, কারণ প্রফেশনাল কুক নেই।”
চিকিৎসা ব্যবস্থার বিষয়ে তিনি জানান, কারা অধিদপ্তরে ১৪১ জন ডাক্তার লিস্টেড, তবে কার্যকরভাবে কম কর্মরত। প্রয়োজনে সিভিল সার্জনদের সহায়তা নেওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্সের স্বল্পতা রয়েছে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
এসএস/টিকে