ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বুধবার (২৭ আগস্ট) থেকেই কার্যকর করছে যুক্তরাষ্ট্র। শুল্কারোপের কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার এ সংক্রান্ত নির্দেশিকাও তৈরি করে ফেলল ট্রাম্প প্রশাসন।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, মার্কিন নির্দেশিকাটি এখনো সরকারিভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে এর খসড়া ইতোমধ্যে আমেরিকার সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ্যে এসেছে। বুধবারই সেটি সরকারিভাবে ঘোষণা করার কথা। এদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক নেবে ট্রাম্প প্রশাসন।
মার্কিন শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ মারফত ওই নির্দেশিকা তৈরি করেছে ট্রাম্প প্রশাসনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতর। নির্দেশিকা অনুসারে, ২৭ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময়ে (ইস্টার্ন টাইম জোন) রাত ১২টা ১মিনিট থেকে শুল্ক কার্যকর হবে। অর্থাৎ ভারতীয় সময় অনুসারে, বুধবার সকাল ৯টা ৩১ মিনিট থেকে এই অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর করছে মার্কিন প্রশাসন।
নির্দেশিকায় ট্রাম্পের গত ৬ আগস্টের নির্দেশের কথাও বলা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি রাশিয়ার ‘হুমকি’ মোকাবিলা করতেই ভারতীয় পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, উল্লেখিত সময়ের পরে মার্কিন বাজারের জন্য প্রবেশ করা বা গুদাম থেকে বেরোনো ভারতীয় পণ্যের ওপর এই শুল্ক কার্যকর হবে।
সাত পাতার ওই নির্দেশিকায় ভারত এবং রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেছে মার্কিন প্রশাসন। সেখানে বলা হয়েছে, রাশিয়া থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তেল কেনে ভারত। সেই কারণেই অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। বুধবার থেকে অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হবে, তা-ও আগেই জানিয়ে দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক-হুমকি যে ভারত মেনে নিচ্ছে না, তা ইতোমধ্যে বেশ কয়েক দফায় স্পষ্ট করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। ওয়াশিংটনও যে নিজেদের স্বার্থে রাশিয়া থেকে বিভিন্ন পণ্য কেনে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছে ভারত। এ অবস্থায় অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় পণ্যের জন্য পথ আরও প্রশস্ত করার লক্ষ্যে এগোতে শুরু করেছে দেশটির সরকার।
সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতেই গুজরাটের আহমেদাবাদের এক সভা থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আবারও ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেন। বলেন, ‘যতই চাপ আসুক, আমরা তার মোকাবিলা করার জন্য শক্তিবৃদ্ধি করে যাব। আমরা আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প নিয়েছিলাম, সেই সংকল্পের পথে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। দেশ শক্তিশালী হয়েছে।’
ঘটনাচক্রে মঙ্গলবারই নয়াদিল্লিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানা গেছে। দেশীয় রফতানিকারকদের ওপর শুল্কের কী প্রভাব পড়তে পারে, তা পর্যালোচনা করা হতে পারে ওই বৈঠকে।
এমআর/এসএন