রাজধানীর জোয়ার সাহারা মৌজার খিলক্ষেত এলাকায় দুটি মসজিদ ও একটি মন্দিরের জন্য জমি বরাদ্দ প্রদান করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এই ঘটনায় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিয়মের বাইরে গিয়ে নজির স্থাপন করলো রেলওয়ে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রেলভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ওইসব মসজিদ ও মন্দিরের পরিচালনা কমিটির কাছে বরাদ্দপত্র তুলে দেন ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. মহিউদ্দিন আরিফ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, রেলপথ সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন প্রমুখ।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদ, আন-নূর জামে মসজিদ ও খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির কর্তৃপক্ষ স্থায়ী উপাসনালয়ের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়েতে আবেদন করে। পরে সেটি পাঠানো হয় রেলপথ মন্ত্রণালয়ে। টরে মন্ত্রণালয়ে সেটির সারসংক্ষেপ তৈরি করে পাঠায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে। পরে সেখান থেকে বিষয়টি অনুমোদিত হয়।
আরও জানা গেছে, রেলের ইতিহাসে এই ঘটনা প্রথম। দুইটি মসজিদ ও একটি মন্দিরের জন্য মোট ৩১.১৫ শতাংশ জায়গা দেওয়া হয়। প্রতি প্লটের প্রতীকী মল্য ধরা হয়েছে মাত ১০০১ টাকা। তিন প্লটের জন্য মোট ৩ হাজার ৩ টাকায় এই জায়গা দেয় রেলওয়ে।
রেলওয়ে জানিয়েছে, এখানে খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদের জন্য ২০.১১ শতাংশ, আন-নূর-জামে মসজিদের জন্য ৫.৫২ শতাংশ এবং খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরের জন্য ৫.৬২ শতাংশ জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত প্রতীকী মূল্যের বিনিময়ে এসব জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব ধর্মেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার কথা বলা হয়েছে। কেউ এই সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে তাকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেলওয়ের জমি মসজিদ ও মন্দিরকে বরাদ্দ দেওয়াকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির হিসেবে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের রোল মডেল। তারপরও বিভিন্ন সময়ে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা উপাসনালয়গুলোকে যারা অপবিত্র করতে চায় তাদের ধর্মীয় কোনো পরিচয় নেই, তারা দুষ্কৃতকারী, ক্রিমিনাল। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের বেহাত হয়ে যাওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি যেগুলো নিয়ে আদালতে কোনো মামলা-মোকদ্দমা নেই এরূপ সম্পত্তি উদ্ধারে সহযোগিতা করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, রেলের আইনে কোথাও লেখা নেই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়া যাবে। এই আইনকে সামনে রেখে এটা কিছু পরিবর্তন করে হিন্দু ভাইবোনদের জন্য পার্মানেন্টলি ভূমি দেওয়া হয়েছে।
এসএস/এসএন