মধ্যরাতে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা এক সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। গতকাল শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
যখন স্থানীয়দের হামলায় চবি শিক্ষার্থী, প্রক্টরিয়াল বডি, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, পুলিশ সদস্যরা আহত হয়ে পড়েন তখন নিরুপায় হয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সবার সহযোগিতা চান চবি প্রক্টর মোহাম্মদ তানভীর হায়দার আরিফ।
পোস্টটি হুবহু এরকম- সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যে, যেভাবে পারেন আমাদেরকে একটু সহযোগিতা করেন।
দুই নাম্বারে আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে বহু শিক্ষার্থী আহত। সহকারী প্রক্টর কুরবান আলী স্যার, নাজমুল স্যার ও নিরাপত্তা প্রধান রহিম ভাই আহত। নিরাপত্তা বাহিনীর অধিকাংশ সদস্য আহত। প্রক্টোরিয়াল বডির গাড়ি, পুলিশের টহলগাড়ি এবং বিশ্ববিদ্যালয় গাড়ি ভেঙে ফেলেছে।
আমরা অতিরিক্ত পুলিশ চেয়েছি যেটা পুলিশের গাড়িতে হামলা হওয়ায় সময়মতো আসেনি। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। দয়া করে সবাই যার যার অবস্থান হতে সহযোগিতা করুন, বিশেষ করে হাঙ্গামা যেন নিভৃত করা যায়। এমনকি আপনাদেরও বিভিন্ন সরকারি পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে প্লিজ সহযোগিতা করুন।
ঘটনার পর আজ রোববার সকাল থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এছাড়া আহতের কথা বিবেচনায় নিয়ে আজকের সব পরীক্ষা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনায় বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের পরীক্ষাও ছিল। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী ২ নম্বর গেটের মাছ বাজার সংলগ্ন শাহাবুদ্দিনের বাসায় ভাড়া থাকেন। তিনি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় ঢুকতে চাইলে দারোয়ানের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে দারোয়ান ওই ছাত্রীকে মারধর করেন। পরে ওই শিক্ষার্থী তার এক ছেলে বন্ধুকে মোবাইলে বিষয়টি জানান।
খবর পেয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে ওই দারোয়ানকে ধরতে গেলে ওই এলাকায় উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। এসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়রা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। অন্য দিকে শিক্ষার্থীরাও চবির সোহরাওয়ার্দী হলের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়ে সংঘর্ষে জড়ান।
এসএস/টিকে