শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার সাক্ষী ছিলেন বদরুদ্দীন উমর

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে জবানবন্দিতে বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, এ দলটির কার্যক্রম দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি বিরোধী।শেখ হাসিনার শাসনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভারতের স্বার্থরক্ষায় নিয়োজিত ছিল। তার শাসন ব্যবস্থা ছিল ভারতের নীলকশায় নির্মিত।

জুলাই গণহত্যায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলায় দুই নম্বর সাক্ষী ছিলেন লেখক ও গবেষক বদরুদ্দীন উমর। মৃত্যুর আগে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দিতে তিনি এসব কথা বলেছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামীম বলেন, প্রয়াত বদরুদ্দীন উমর শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন। ট্র‍্যাইব্যুনালে এসে সাক্ষ্য দিতে পারলেন না, তবে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে উনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র‍্যাইব্যুনালের আইনের ১৯ (২) ধারা অনুযায়ী কোন সাক্ষী যদি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সাক্ষ্য দিয়ে মারা যান, সেক্ষেত্রে প্রসিকিউশনের আবেদনে ট্র‍্যাইব্যুনাল তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া সাক্ষ্যকে গ্রহণ করতে পারেন। প্রসিকিউশন আবেদন করবে কি না? সে বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর মহোদয় সিদ্ধান্ত নেবেন।

মৃত্যুর আগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে চেয়েছিলেন বদরুদ্দীন উমর। এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন তিনি। এতদিন তার সুস্থতার অপেক্ষায় ছিল প্রসিকিউশন।

রোববার হঠাৎ মারা যান বদরুদ্দীন উমর।

দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন বদরুদ্দীন উমর। গত ২২ জুলাই শ্বাসকষ্ট ও নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। ১০ দিন চিকিৎসা শেষে গত সপ্তাহে তিনি বাসায় ফেরেন।

জানা গেছে, শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রোববার সকালে বদরুদ্দীন উমরকে ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে ১০টা ৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

১৯৩১ সালে ২০ ডিসেম্বর ভারতের বর্ধমানে জন্মগ্রহণ করেন বদরুদ্দীন উমর। তার বাবা আবুল হাশিম ভারতীয় উপমহাদেশের একজন মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ ছিলেন। ষাটের দশকে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন আর ধর্ম ও রাজনীতি নিয়ে তার লেখা বইগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

তার চিন্তা বুঝতে সহায়ক বিশেষ করে ‘সাম্প্রদায়িকতা’ (১৯৬৬), ‘সংস্কৃতির সংকট’ (১৯৬৭), ‘সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা’ (১৯৬৯)-তিনটি বই। এই বই লিখেই তিনি ক্ষান্ত হননি। তিনি শাসকদের অধীনে চাকরি পর্যন্ত করবেন না, এ মনোভাব পোষণ করে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন।

এমআর/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img

সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ

ভিন্নমত মানেই শত্রু, এটাই কি আমাদের গণতন্ত্র! Sep 07, 2025
img
দুঃসংবাদ পেল পিএসজি Sep 07, 2025
img
ডিএমপিতে ৫ কর্মকর্তাকে বদলি Sep 07, 2025
img
ডাকসু নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে থাকছে কঠোর নিয়ম Sep 07, 2025
সুকুমার জানালেন ‘পুষ্পা থ্রি’-এর আপডেট! Sep 07, 2025
শিল্পার জীবনে নতুন মোড়, ‘প্রেমিক’ এলো ঘরে! Sep 07, 2025
img

ড. আব্দুল মান্নান

জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে হবে, কারণ তারা আ. লীগকে পুনর্বাসন করতে চায় Sep 07, 2025
ডাকসুর নেতৃত্ব নিয়ে শিক্ষার্থীদের বার্তা! Sep 07, 2025
"ভোটারদের ভাই ও বন্ধুরা কল দিয়ে বলছে–আমাকে ভোট দিতে" Sep 07, 2025
img
এশিয়া কাপের জন্য ভারতের জার্সি উন্মোচন Sep 07, 2025
img
উত্তর কোরিয়াকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠালো ইরান! Sep 07, 2025
img
অবশেষে এশিয়া কাপে বাদ পড়া নিয়ে মুখ খুললেন শ্রেয়াস আইয়ার Sep 07, 2025
img
ছাত্রলীগ নেতা ছেলেকে ধরিয়ে দিতে বাবার ফেসবুক পোস্ট Sep 07, 2025
img
হাসপাতাল থেকে ফিরলেন মোরসালিনদের কোচ Sep 07, 2025
img
আবু বাকেরের পক্ষে ভোট চাইলেন নাহিদ ইসলাম Sep 07, 2025
img
শুরু হলো আংশিক চন্দ্রগ্রহণ, ধীরে ধীরে লাল হবে চাঁদ Sep 07, 2025
img
শেরপুরে ১৪৯টি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা বিএনপির Sep 07, 2025
img
যুক্তরাজ্যে আজ লাখো ফোনে বেজে উঠলো সাইরেন Sep 07, 2025
img
বিরল রোগে আক্রান্ত স্পাইডার ম্যানখ্যাত টম হল্যান্ড Sep 07, 2025
img
রাকসু নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা ছাত্রশিবিরের Sep 07, 2025