রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ইমাম মাহদী দাবি করা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার মাজারে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ চালালে রাসেল মোল্লা (২৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৩৫০০ থেকে ৪০০০ জনকে আসামি করে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব বলেন, নিহত রাসেলের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩৫০০ থেকে ৪০০০ জনকে আসামি করে সোমবার দিবাগত রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় হত্যাসহ অগ্নিসংযোগ, মরদেহ পোড়ানো, ক্ষতিসাধন, চুরি, জখম এর অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় লতিফ ইমাম ও আসলাম শেখ নামের দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় যারা গ্রেপ্তার রয়েছে বা যারা গ্রেপ্তার হবে তদন্তে তাদের যদি হত্যা মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে তাদেরকে হত্যা মামলাতেও শোন এরেস্ট দেখানো হবে।
নিহত রাসেল মোল্লা জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের জটু মিস্ত্রিপাড়ার আজাদ মোল্লার ছেলে। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। নিহত রাসেল মোস্তফা মেটাল ইন্ডিস্ট্রিজের কাভার্ডভ্যান চালক ছিলেন।
জানা গেছে, শুক্রবার সকালে নুরাল পাগলার দরবারে প্রবেশ করেন তার ভক্ত রাসেল। শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষুব্ধ জনতা দরবারে হামলা-ভাঙচুরের সময় রাসেলের ওপর হামলা করা হয়।এতে রাসেল গুরুতর আহত হয়।পরে তাকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সেখান থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হলে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাসেলের মৃত্যু হয়।
এর আগে, গত ৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে পুলিশের সরকারি কাজে বাঁধা, পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ১৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর জুমার নামাজের পর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নুরাল পাগলার দরবারে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় নুরাল পাগলার ভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষে রাসেল মোল্লা নামের এক যুবক নিহত এবং দুই পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয় ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ১০ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা।
এমআর/টিকে