ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাবেক সাংসদ অর্জুন সিংয়ের এক বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে। নেপালের মতো পশ্চিমবঙ্গেও যুবসমাজকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণ–অভ্যুত্থান করার আহ্বান জানানোয় তার বিরুদ্ধে অন্তত ১৪টি মামলা দায়ের হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুরের এই সাবেক সাংসদ বলেন, ‘রক্তপাত ছাড়া কোনো দুর্নীতিগ্রস্ত শাসন শেষ হয় না। নেপালের যুবসমাজ দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেভাবে রুখে দাঁড়িয়েছে, বাংলার তরুণ-তরুণীদেরও সেই সাহস দেখানো উচিত। এই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে উৎখাত করতে গণ–অভ্যুত্থান প্রয়োজন।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলন ব্রিটিশ শাসনকে বিদায় করেনি। কোনো স্বৈরাচারী সরকার পতনের জন্য রক্তপাত অনিবার্য।’
অর্জুন সিংয়ের বক্তব্যের পর তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ করে, তিনি উসকানিমূলক মন্তব্যের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের একাধিক থানায় পৌরসভার কাউন্সিলররা তার নামে অভিযোগ দায়ের করেন। এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪টি এফআইআর হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনার পর সতর্কবার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশের অশান্তির সুযোগে কেউ কেউ ঘোলা পানিতে মাছ ধরতে চাইছে। বাংলায় অশান্তি বাধানোর চেষ্টা হতে পারে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে একমত হয়নি রাজ্য বিজেপি। তাদের বক্তব্য, প্রতিবেশী দেশের পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারের বিষয়। তবে বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য পাল্টা মন্তব্য করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর জনবিন্যাস দ্রুত বদলে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বরং সেদিকে নজর দিন।’
এদিকে একাধিক মামলা ও তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসতে নারাজ অর্জুন সিং। তিনি বলেন, ‘আমি আবারও বলছি, বাংলায় দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে উৎখাতের জন্য গণ–অভ্যুত্থান প্রয়োজন। আমার বিরুদ্ধে ১৮৪টি মামলা আছে, আরও ৪০০ হোক, আমি তা স্বাগত জানাই।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ইএ/টিকে