অতিরিক্ত ৬ বছরের কারাভোগ শেষে ভারতে ফিরলেন রামাতা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে মাত্র ৬ মাসের সাজা শেষ হওয়ার পরও প্রায় ৬ বছর ৪ মাস অতিরিক্ত কারাভোগের পর অবশেষে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে ভারতীয় নাগরিক রাম দে মাহাতাকে (৬০)। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

রাম দে মাহাতা ভারতের বিহার রাজ্যের বাপিয়া জেলার মজালিয়া থানার গুজারা গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম তাপা মাহাতা। হস্তান্তরের সময় দুই দেশের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ), জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ এবং মাহাতার ছেলে ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট কারাগার ও ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের অভিযোগে রাম দে মাহাতাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা পুলিশ আটক করে। পরে তার বিরুদ্ধে ১৯৫২ সালের ‘কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট’-এ মামলা করে পরদিন তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

ওই মামলায় ২০১৯ সালের ১২ মে তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। বিচার চলাকালীন হাজতবাসের সময় বাদ দিয়ে ২০১৯ সালের ২৯ মে তার সাজার মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু এরপরও দীর্ঘ ছয় বছরের বেশি সময় ধরে তিনি বাংলাদেশে আটক ছিলেন, পরিচয় যাচাই ও প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায়।

জানা যায়, সাজা শেষে কারা কর্তৃপক্ষ ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাম দে মাহাতার পরিচয় নিশ্চিত করে এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রত্যয়নপত্র পাওয়ার পর বিজিবির মাধ্যমে বিএসএফের সঙ্গে সমন্বয় করে হস্তান্তরের দিন নির্ধারণ করা হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার (জেল সুপারিনটেনডেন্ট) জাকির হোসেন বলেন, “সাজার মেয়াদ শেষে রাম দে মাহাতা ‘রিলিফ প্রিজনার’ (আরপি) হিসেবে কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন। তার পরিচয় যাচাই ও স্বজনদের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে অনেক সময় লেগেছে। অবশেষে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছে।”

সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার দুপুরে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও প্রক্রিয়া শেষে মাহাতাকে তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’


ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ডাকসুর ভোট ম্যানুয়ালি গণনার জন্য উমামার লিখিত আবেদন Sep 16, 2025
img

মাসুদ সাঈদী

জনগণের ভালোবাসা অর্জন করুন, তাহলে নির্বাচন বর্জনের দরকার হবে না Sep 16, 2025
img
আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ Sep 16, 2025
img
আগস্টে ৪৯ মামলায় জড়িত ৩১১ দুর্নীতিবাজ Sep 15, 2025
img
১৫ কেজির কোরাল মাছ বিক্রি ১৮ হাজারে Sep 15, 2025
img
শ্রীলঙ্কার সামনে হংকংয়ের ১৫০ রানের চ্যালেঞ্জ Sep 15, 2025
img
নিকুঞ্জে নাগরিক জাগরণ: হারানো শান্তি ফিরে পাওয়ার গল্প Sep 15, 2025
img
সুপার ফোরে খেলবে বাংলাদেশ, আত্মবিশ্বাসী কোচ Sep 15, 2025
img
ম্যাচের আগে বাংলাদেশের প্রশংসায় জনাথন ট্রট Sep 15, 2025
img
অসুস্থ অমিতাভকে ২০০ জন ৬০ ব্যাগ রক্ত দিয়েছিলেন Sep 15, 2025
img
অতিরিক্ত ৬ বছরের কারাভোগ শেষে ভারতে ফিরলেন রামাতা Sep 15, 2025
এশিয়া কাপে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, সুপার ফোর নিশ্চিত কার? Sep 15, 2025
img
আলোচনা ভেস্তে দিতেই দোহায় হামলা : কাতারি আমির Sep 15, 2025
img
তিস্তা প্রকল্পে আগ্রহী চীন, পাঠাচ্ছে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল Sep 15, 2025
img
ভাঙ্গায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, ক্ষতিগ্রস্ত ৮ গাড়ি ও ১৯ মোটরসাইকেল Sep 15, 2025
img

কাতারে হামলা

নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী Sep 15, 2025
img
দেশবাসী আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন : জামায়াত সেক্রেটারি Sep 15, 2025
img
লেভেল ফোর কোচিং শেষ করলেন মঞ্জু Sep 15, 2025
img
ওমানকে হারিয়ে প্রথম জয় আমিরাতের Sep 15, 2025
img
বিসিবি নির্বাচনে খেলোয়াড় প্রতিনিধি চায় কোয়াব! Sep 15, 2025