রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ফলে বন্ধ রয়েছে সকল ধরনের দাপ্তরিক কার্যক্রম। তবে কর্মবিরতি উপেক্ষা করে গাছতলায় বসে ক্লাস নিয়েছেন আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোর্শেদুল ইসলাম পিটার।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের সামনের গাছতলায় তিনি ক্লাস নেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও নিশ্চিত করেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মোর্শেদুল ইসলাম পিটার বলেন, আমি চাই না শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো অনৈতিক অধিকার চাপিয়ে দেওয়া হোক। প্রশাসনে যারা বসে আছেন তারা মিথ্যুক ও প্রতারক। যারা জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের পালস বুঝে, তাদেরই প্রশাসনে থাকা উচিত।
তিনি আরও বলেন, আমি আজ ক্লাস রুমে ক্লাস নিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী আমাকে সহায়তা করেনি। আমি যে দায়িত্বের জন্য বেতন পাই, আমি সেই দায়িত্ব পালন করেছি। এখানে কে কী ভাবলো তা দেখার সময় আমার নাই।
অধ্যাপক পিটার অভিযোগ করে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর বৈষম্যহীন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার জন্যই বর্তমান প্রশাসন বসেছে। কিন্তু তারা বারবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বেইমানি করছে। প্রশাসনে যারা বসে আছে তারা সবাই ক্ষমতালোভী। পোষ্য কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা হিসেবে জায়েজ করার চেষ্টা করছে তারা।
এর আগে গতকাল শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টার দিকে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হলে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তার গাড়ি আটকে দেন। পরে তিনি হেঁটে তার বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তার বাসভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দিলে তিনি জুবেরী ভবনের দিকে যান। তার সঙ্গে প্রক্টর মাহবুবর রহমানও ছিলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিক থেকে জুবেরী ভবনে উপ-উপাচার্য মাঈন উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে উপ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রোববার কর্মবিরতির ডাক দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আব্দুল আলিম। তারই প্রেক্ষিতে আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি ফলকের সামনের লিচুতলায় অবস্থান নিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এবি/এসএন