সুপার টাইফুন ‘রাগাসার’-এর বিধ্বংসী আঘাতে তাইওয়ানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে। এছাড়া এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১৭ জন। টাইফুনটি হংকংয়ে তীব্র বাতাস ও উত্তাল ঢেউ নিয়ে আঘাত হানার পর এখন চীনের মূল ভূখণ্ডের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে বন্যা প্রবণ এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই প্রায় ২০ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
তাইওয়ানের কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা যায়, হুয়ালিয়েন কাউন্টির গুয়াংফু টাউনশিপে মাতাই'আন ক্রিকের বাঁধ ভেঙে পড়ায় ব্যাপক বন্যা হয়। নিহতদের বেশিরভাগই বয়স্ক ব্যক্তি, যারা দ্রুত উঁচু স্থানে সরে যেতে পারেননি। এ ঘটনায় ৩৪ জন আহত হয়েছেন এবং নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
তাইওয়ানের সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (সিএনএ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের বৃষ্টিতে পানি ও কাদায় পূর্ণ জলাধারটির বাঁধ মঙ্গলবার সকালে উপচে পড়ে এবং বিকেলে একটি বিশাল বন্যার সৃষ্টি করে। স্থানীয়ভাবে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, স্রোতের তীব্রতায় রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়েছে, যানবাহন ভেসে যাচ্ছে এবং একটি সেতু ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেক বাসিন্দাকে বন্যার পানি সরে না যাওয়া পর্যন্ত ছাদে আটকে থাকতে দেখা গেছে।
হংকংয়ে টাইফুনটি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লেও শক্তিশালী বাতাস ও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। হংকং আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সর্বোচ্চ স্তরের টাইফুন সতর্কতা (টি১০) জারি করেছিল, যা পরে স্তর ৮-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দাদের ভারী বৃষ্টি, ঝড় ও ধ্বংসাত্মক বাতাসের জন্য সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। হংকং ফ্রি প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, আবহাওয়ার অবনতির কারণে ৭০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, চীনের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র সতর্ক করে দিয়েছে যে টাইফুনটি শিগগিরই দক্ষিণ গুয়াংডং প্রদেশে আঘাত হানতে পারে। এজন্য বন্যা প্রবণ এলাকা, দুর্বল কাঠামো এবং উচ্চ ভবনগুলোর বাসিন্দাসহ মোট প্রায় ১৯ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই জরুরি ভিত্তিতে সকল সরকারি বিভাগ ও সেনাবাহিনীকে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত করেছেন। তিনি জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে এবং উদ্ধারকর্মীদের নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন। টাইফুনের প্রভাবে তাইওয়ানের বিমান, রেল ও ফেরি পরিষেবা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
ইএ/টিকে