ইসরাইলি বসতি সম্প্রসারণে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনা জেরুজালেমকে আশপাশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করবে।
প্রায় দুই বছর ধরে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে আখ্যা দিয়েছেন মাহমুদ আব্বাস। ভবিষ্যতে গাজা শাসনে হামাসের ভূমিকা থাকবে না বলেও জানান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশনের তৃতীয় দিন ভার্চুয়ালি ভাষণ দেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ভাষণে ফিলিস্তিন সংকটের ওপর জোর দেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরাইল। এতে বাস্তুচ্যুতির মুখে দাঁড়িয়ে আছে ফিলিস্তিনিরা। ইসরাইল যা করছে তা শুধু আগ্রাসন নয়; এটি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। এর প্রমাণ নথিভুক্ত হয়েছে। তা ইতিহাসের পৃষ্ঠায় ও আন্তর্জাতিক বিবেকের পাতায় মানবিক বিপর্যয়ের ভয়াবহ অধ্যায় হিসেবে লিপিবদ্ধ হবে।
এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা না দেয়ায় ভার্চুয়ালি ভাষণ দেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ভাষণে আব্বাস বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বসতি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা পশ্চিম তীরকে দুটি ভাগে বিভক্ত করবে। এতে দখলকৃত জেরুজালেমকে আশপাশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করবে।
তার কথায়, ইসরাইলের পরিকল্পনা হলো এক ধরনের বসতি সম্প্রসারণ প্রকল্প, যার মাধ্যমে পশ্চিম তীরের জেরুজালেম শহরের পূর্বদিকে অবস্থিত মা'আলে আদুমিম নামক বৃহৎ বসতির সঙ্গে জেরুজালেমকে যুক্ত করতে চায় ইসরাইল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলারও নিন্দা জানান মাহমুদ আব্বাস। ভবিষ্যতে গাজার শাসনকার্যে সংগঠনটির কোন ভূমিকা থাকবে না বলেও স্পষ্ট করেন। গাজার প্রশাসনিক কমিটির কাছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পূর্ণ দায়িত্ব দেয়া এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বেসামরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবিও জানান মাহমুদ আব্বাস।
গাজায় যুদ্ধ বন্ধ, শর্তহীন মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত, দুই পক্ষের সব জিম্মি ও বন্দির মুক্তি, দখলদার বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান মাহমুদ আব্বাস।
অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেয়ায় যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগালসহ অন্যান্য দেশকে ধন্যবাদ জানান আব্বাস। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা ও ন্যায্য অধিকারের পক্ষে আওয়াজ তোলা প্রতিটি গোষ্ঠীকেও।
ইএ/টিকে