কিছু আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচন চায় না : প্রধান উপদেষ্টা

কিছু আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সামনের কয়েক মাস বাংলাদেশে জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ এক ‘গুরুত্বপূর্ণ সময়’ অতিক্রম করছে। তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের আরো ঘন ঘন বাংলাদেশ সফরের আহ্বান জানান।

সোমবার নিউইয়র্কের একটি হোটেলে রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার সংস্থার সভাপতি কেরি কেনেডির নেতৃত্বে শীর্ষ মানবাধিকার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।

আজ মঙ্গলবার বাসস এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা তাদের সামনে নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমরা চাই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হোক অবাধ ও শান্তিপূর্ণ—এমন নির্বাচন যা বাংলাদেশে আগে কখনো হয়নি। বছরের পর বছর ভোটার তালিকায় অনেকের নাম থাকলেও তারা ভোট দিতে পারেনি।

এবার আমরা বিশেষভাবে নারীদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে চাই এবং তাদের অংশগ্রহণ উদযাপন করতে চাই। ভোটদান প্রক্রিয়া সম্পর্কে মানুষকে জানাতে আমরা ব্যাপক প্রচারণা চালাব। আমাদের লক্ষ্য দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, “কিছু আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।

কিছু শক্তি রয়েছে যারা চায় না নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। আমরা জানি না তারা কার হয়ে কাজ করছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ ঢালা হচ্ছে, যার সুবিধাভোগী রয়েছে দেশের ভিতরে ও বাইরে। তারা সুসংগঠিত—এটাই সবচেয়ে বিপজ্জনক বিষয়। সামনে কয়েক মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ওই বৈঠকে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কারের জন্য ১১টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এরই মধ্যে সংস্কার প্রস্তাবসমূহ পর্যালোচনা করছে। রাজনৈতিক দলগুলোও এই প্রক্রিয়ার অংশ। আশা করছি, জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক সংস্কারগুলো অক্টোবরের মধ্যে খসড়া আকারে তৈরি হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলো তাতে স্বাক্ষর করবে।

বৈঠকে মানবাধিকার কর্মীরা মানুষের মানবাধিকার সুরক্ষায় নিরাপত্তা সেক্টরের সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক জন সিফটন বলেন, বেশি সংখ্যক সংস্কার নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে, যেন সংসদ গঠনের পরও তারা এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার সংস্থার আইনজীবী ক্যাথরিন কুপার; সিভিকাস-এর সাধারণ সম্পাদক মনদীপ তিওয়ানা, ফোর্টিফাই রাইটস-এর প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা ম্যাথিউ স্মিথ; টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক সাবহানাজ রাশিদ দিয়া; অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ক্যারোলিন ন্যাশ; ওহাইও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং আন্তর্জাতিক স্কলার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান এবং সিভিকাস জাতিসংঘের উপদেষ্টা জেসেলিনা রানা।

টিএ/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নূরুল মজিদের হাতকড়া পরানো অবস্থায় মৃত্যু, এ কেমন অমানবিকতা : মান্না Sep 30, 2025
img
এনটিআরসিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে এমসিকিউতে ৮০ নম্বর বাধ্যতামূলক Sep 30, 2025
img
আপনারা হয়তো আমার ফ্যামিলি সম্পর্কে জানেন না: সাদিয়া জাহান প্রভা Sep 30, 2025
img
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও অন্তর্বর্তী সরকার প্রস্তাব: ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ঘিরে প্রশ্ন Sep 30, 2025
img
ডেঙ্গুতে একদিনে প্রাণ গেল ৩ জনের, হাসপাতালে ভর্তি ৫৫৬ Sep 30, 2025
img
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে : রিজভী Sep 30, 2025
img
ড. ইউনূস চাইলে আ. লীগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেন : রাশেদ খান Sep 30, 2025
img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ Sep 30, 2025
img
ছাত্রদলের হামিমের সম্ভাবনা আছে আগামীর ডাকসু ভিপি হওয়ার : পিনাকী ভট্টাচার্য Sep 30, 2025
img
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের আপত্তি নেই এনসিপির : সারজিস Sep 30, 2025
img
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ট্রাম্প Sep 30, 2025
img
আগামী নির্বাচনে পলাতক ফ্যাসিস্ট শক্তি মোকাবিলাই বড় চ্যালেঞ্জ : আইজিপি Sep 30, 2025
img
শেখ হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ Sep 30, 2025
img
নোয়াখালীতে এ.কে. জালাল স্মৃতি গ্রন্থাগার পরিদর্শন করলেন ঢাবি উপাচার্য Sep 30, 2025
img
চাঁদাবাজি মামলায় ছাত্রদলের ৪ নেতাকর্মী কারাগারে Sep 30, 2025
img
পূজার পরই বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন মধুমিতা ও দেবমাল্য! Sep 30, 2025
img
এশিয়া কাপে হারের পর ক্রিকেটারদের দুঃসংবাদ দিল পিসিবি Sep 30, 2025
img
সাবেক এমপি মুকুল ও স্ত্রীর নামে দুর্নীতির ২ মামলা Sep 30, 2025
img

পিনাকী ভট্টাচার্য

স্বার্থপর, লোভী, বিবেকহীন মানি মেশিন Sep 30, 2025
img
আলিয়ার সাফল্যে গর্বিত, তবে রাহাকে নিয়েই ভরসা মহেশ ভাটের Sep 30, 2025