দেশজুড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ-২ এর ১০ নম্বর রোড এলাকা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় অভিযান চালিয়ে কুখ্যাত চাঁদাবাজ মোঃ ইসমাইল হোসেন বাবু ওরফে মোফা বাবু (৩২) কে আটক করে পূর্বাচল আর্মি ক্যাম্পের টহল দল। এসময় তার কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের নগদ অর্থও উদ্ধার করা হয়।
অভিযোগকারী স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ সুজন মিয়া জানান, “খিলক্ষেত ১০ নম্বর রোডের পশ্চিম প্রান্তের পানির পাম্প সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড়ে আমার দোকান। মোফা প্রতিদিন চাঁদা দাবি করতো। এতদিন আমি চা-সিগারেট দিয়ে তাকে সামলাতাম। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে সে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে বেদম মারধর করে, দোকান ভাঙচুর চালায় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। নিরুপায় হয়ে আমি পূর্বাচল আর্মি ক্যাম্পে অভিযোগ জানাই।”
গ্রেফতারকৃত মোফা বর্তমানে খিলক্ষেত থানার ৯৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব। তার পিতার নাম মোঃ মোফাজ্জল। বাড়ি বোরহান উদ্দিন, ভোলা।
দীর্ঘদিন ধরে সে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছিল। এলাকায় “চাঁদাবাজের ত্রাস” হিসেবে পরিচিত এই মোফা বিএনপি’র শীর্ষস্থানীয় নেতা সিলটি বাবুর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এ সমস্ত অপকর্ম চালিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
মোফা বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ ফরিদ হোসেনের সাথে। তিনি বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, "আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলে কোন সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজের স্থান নেই, তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পেলে আমরা সাংগঠনিক সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিবো"
৩ বার আটক হওয়ার পরেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেননি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমরা এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাইনি, পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম"
স্থানীয়রা জানান, শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর হাতেই এটি নিয়ে মোফা বাবুর তৃতীয় গ্রেফতার। দুঃখজনক হলেও সত্য— এতবার ধরা পড়ার পরও তার দলীয় পরিচয়ে এখনো বহিষ্কার কিংবা সামান্য ভৎসনাও করা হয়নি।
মোফার গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে নিকুঞ্জ এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। এলাকাবাসী সেনাবাহিনীর এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, “কেন এমন স্বীকৃত চাঁদাবাজরা আদালত থেকে অতি দ্রুত বেরিয়ে এসে আবারও জনগণকে জিম্মি করে, তা সরকারকেই ভাবতে হবে।”
পরবর্তীতে সেনাবাহিনী গ্রেফতারকৃত মোফাকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে খিলক্ষেত থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
সেনাবাহিনী সূত্র জানিয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ইউটি/টিএ