পাকিস্তান থেকে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৮৪০ মিলিয়ন রিঙ্গিত) মূল্যের মাংস ও অন্যান্য কৃষিপণ্য আমদানি করবে মালয়েশিয়া।
সোমবার (৬ অক্টোবর) পুত্রজায়ার সেরি পেরদানা কমপ্লেক্সে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের উপস্থিতিতে এ ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ মালয়েশিয়া সফর করছেন। সোমবার মধ্যাহ্নভোজের পর পুত্রজায়ার সেরি পেরদানা কমপ্লেক্সে পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন আনোয়ার ইব্রাহিম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নিশ্চিত করার আশ্বাস দেয়ায় গরুর মাংসসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য আমদানি করতে প্রস্তুত মালয়েশিয়া।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল্লেখ করেন, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তান ১৯৫৭ সালে মালয়েশিয়ার স্বাধীনতার পর থেকেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উপভোগ করছে। ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা শুরু থেকেই এই সম্পর্কের মূল চালিকাশক্তি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রতিরক্ষা, কৃষি ও নবায়নযোগ্য শক্তির মতো কৌশলগত ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
মালয়েশিয়া এরই মধ্যে পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি বাড়িয়েছে এবং যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়াও পাকিস্তানের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উৎপাদন খাতে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে পাম তেল রফতানি বাড়াতে আগ্রহী।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে উভয় নেতা মালয়েশিয়া- পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। শেহবাজ শরিফ দুই দেশের মধ্যে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল ও সেমিকন্ডাক্টর খাতে উন্নত সহযোগিতা চেয়েছেন।
আনোয়ার ইব্রাহিম এই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে বলেন, পাকিস্তান প্রাথমিকভাবে এই ক্ষেত্রগুলোতে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অগ্রণী ছিল এবং এখন দেশে স্থিতিশীলতা থাকায় সেই সম্ভাবনা আবার কাজে লাগাতে মালয়েশিয়া যেকোনো ধরনের সহযোগিতা সাদরে গ্রহণ করবে।
যৌথ বিবৃতিতে দুই নেতা হালাল পণ্য ও পরিষেবার ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চাহিদা স্বীকার করেন এবং এই ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হন। এর মধ্যে রয়েছে হালাল সার্টিফিকেশনের পারস্পরিক স্বীকৃতি এবং হালাল খাদ্য সরবরাহ ও পণ্য উৎপাদন মজবুত করা।
এছাড়া তারা টেকসই কৃষি পদ্ধতির গুরুত্ব স্বীকার করে যৌথ গবেষণা, উদ্ভাবন এবং পরিবেশবান্ধব কৃষি উৎপাদন পদ্ধতির বিকাশে কাজ করার বিষয়ে একমত হন। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা স্বীকার করে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও সুষম ও টেকসই করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তারা।
গত রোববার (৫ অক্টোবর) শেহবাজ শরিফের তিনদিনের মালয়েশিয়া সফর শুরু হয়। ওইদিন রাতে এক বিশেষ ফ্লাইটে কুয়ালালামপুর পৌঁছান তিনি। এ সময় মালয়েশিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী ফাহমি ফাদজিল তাকে স্বাগত জানান। এ সময় শেহবাজ শরিফকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। গত বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এশিয়ার দেশটিতে এটা তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।
কেএন/টিকে