বাস চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে একটি কাউন্টারভিত্তিক পাইলট প্রকল্প চালু করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এতে নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকেই যাত্রী ওঠানামা ও টিকিট কাটতে হবে। ফলে রাস্তায় যেখানে-সেখানে বাস থামানো ও নগদ টাকা নেওয়ার প্রথা বন্ধ করা হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজধানীর বাস চলাচলে শৃঙ্খলা ও সময়নিষ্ঠা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবহন সেক্টরে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন।
রোববার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর রেল ভবনে সড়ক, রেলপথ, যোগাযোগ অবকাঠামো ও পরিবহন সম্পর্কিত খাত নিয়ে কাজ করা পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোড (আরআরআর) আয়োজিত এক মতবিনিময় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাস মালিক সমিতিকে আমরা একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে আনতে চাই। প্রতিটি বাসের নির্ধারিত কাউন্টার থাকবে, সেখান থেকেই যাত্রী উঠবে এবং ভাড়া নেওয়া হবে। এতে রাস্তার ভিড় ও বিশৃঙ্খলা অনেকটাই কমে আসবে। এই উদ্যোগে বাস মালিক সমিতি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং সড়ক বিভাগ যৌথভাবে কাজ করছে। প্রকল্পটি পাইলট হিসেবে শুরু হবে এবং এক মাসের মধ্যেই এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হবে। এখন অনেক বাস যেখানে-সেখানে থেমে যাত্রী তোলে, এতে জ্যাম ও দুর্ঘটনা বাড়ে। আমরা চাই এই বিশৃঙ্খলা থেকে বেরিয়ে আসতে। নির্ধারিত কাউন্টার ব্যবস্থা চালু হলে যাত্রীরা আরও নিরাপদ ও স্বস্তিতে চলাচল করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, একইসঙ্গে রাজধানীতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে সিগন্যালাইজেশন প্রকল্পও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বর্তমানে সাতটি সিগন্যাল সিস্টেম চালু হয়েছে এবং আরও ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশনে সিগন্যাল স্থাপনের কাজ চলছে। প্রথম দিকে মানুষকে নতুন সিগন্যাল ব্যবস্থায় অভ্যস্ত করতে কিছুটা সময় লেগেছে। তবে এখন আমরা ইতিবাচক পরিবর্তন দেখছি। দুই মাসের মধ্যে আরও কয়েকটি সিগন্যাল চালু হবে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, পরবর্তী ধাপে রাজধানীতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্ভর স্বয়ংক্রিয় সিগনাল ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে। ডিএনসিসি ও ডিএসিসির সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামী পর্যায়ে এআই-সহায়ক সিগন্যাল বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। মূল লক্ষ্য হলো পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনা। কাউন্টারভিত্তিক বাস চলাচল ও আধুনিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু হলে রাজধানীর যানবাহন ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকর হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোডের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলামসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।
আইকে/এসেএন