চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনের প্রতিটি ভোট কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। একই সঙ্গে থাকছে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকাও।
রোববার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন।
তিনি বলেন, বুধবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যালেট পেপার ছাপানোসহ সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ক্যাম্পাসের আইটি ভবন, নতুন কলা ভবন, বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান ও বাণিজ্য (বিবিএ) অনুষদ ভবনে ভোট নেওয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, পাঁচটি ভবনের ৬০টি কক্ষে প্রায় ৭০০টি বুথে ভোট নেওয়া হবে। প্রতিটি কক্ষে গড়ে চার থেকে পাঁচশ জন শিক্ষার্থী ভোট দেবেন।
প্রতিটি শিক্ষার্থীর চাকসুতে ২৬টি এবং হলে ১৪টি পদে ভোট দেওয়ার সময় ধরে গোপন কক্ষ তৈরি করা হয়েছে বলে তুলে ধরেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, চাকসুর মোট ব্যালট পেপার চার পৃষ্ঠার। হল ও হোস্টেল সংসদের ব্যালট পেপার এক পৃষ্ঠার। ব্যালটে প্রার্থীর নাম ও ব্যালট নম্বর থাকবে। বৃত্ত ভরাট করে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেবেন।
চাকসু নির্বাচন স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে অধ্যাপক মনির বলেন, শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো ধরনের সন্দেহ না থাকে সেজন্য স্বচ্ছ ব্যালেট বাক্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি ভোট কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। সেটির ছবি কেন্দ্রের বাইরে দৃশ্যমান থাকবে, যা সবাই দেখতে পাবেন। এসময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে ভিডিওগুলো রেকর্ড থাকবে, যাতে কারো কোনো সন্দেহ না থাকে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, যেসব অনুষদ ভবনে ভোট হবে সেগুলোর ডিন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন এবং বিভাগের চেয়ারম্যানরা প্রিজাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকবেন।
এছাড়া বিভাগীয় শিক্ষকদের সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা পোলিং অফিসারের দায়িত্বে থাকবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রতিটি ভবনে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সহায়তায় একজন করে নির্বাচন কমিশনার এবং হল প্রভোস্টরা থাকবেন।
কেন্দ্র থেকে ভোটের সরঞ্জামগুলো রিটার্নিং কর্মকর্তারা গ্রহণ করে প্রত্যেকটি হলের জন্য প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে হস্তান্তর করবেন।
তিনি বলেন, অব্যবহৃত ব্যালট সিল গালা করে ভোটের বাক্সসহ কেন্দ্র থেকে ফেরত আসবে এবং গণনার জন্য ডিজিটাল কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
ফল গণনার বিষয়ে তিনি বলেন, “ভোট গণনার স্ক্যানিং হবে ইমেজ আকারে। সেই ইমেজকে দুইটা প্যারালাল স্ক্যানিং করা হবে। যারা নির্বাচনি ভোট গণনা করবে তাদের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সেলের প্রোগ্রামার আলাদাভাবে করবে। দুইটি মিলে গেলে আমরা ভোটের ফল প্রকাশ করব।”
মত বিনিময় সভায় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীরা যেসব দাবি তুলেছিল সেগুলোর অগ্রাধিকার তালিকা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন না হওয়ায় সেটাকে অগ্রাধিকারের প্রথমে রেখে আয়োজন করা হয়। এরপর এখন হচ্ছে চাকসু নির্বাচন। এভাবে শিক্ষার্থীদের কী কী সুবিধা দেওয়া যায় তার একটি অগ্রাধিকার তালিকা করে সেই অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।
টিকে/