অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন নির্বিঘ্নে নির্বাচন আয়োজন করতে পারে, সে জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট নয় এমন দাবি থেকে আপাতত বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) ঠাকুরগাঁয়ে এক মতবিনিময় সভায় বক্তৃতাকালে এ আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ এক ভোট, এক প্রার্থী পদ্ধতি বোঝে, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি এ দেশের জন্য উপযোগী নয়।
নির্বাচন ব্যবস্থাকে তৎকালীন সরকার প্রহসনে পরিণত করেছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন জরুরি দরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে কতগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলের মতামত নেয়া হলেও সব দল যে একমত হয়েছে তা নয়।
তিনি বলেন, ‘কয়েকটি দল পিআর পদ্ধতির দাবি নিয়ে এসেছে, কিন্তু এই পদ্ধতি দেশের জন্য উপযোগী নয়। মানুষ বোঝে এক ভোট এক প্রার্থী। তাই এই মুহূর্তে পিআর নিয়ে যারা রাস্তায় নেমেছেন, তাদের প্রতি আহ্বান, দাবি এখন রেখে দিন, ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার এলে এগুলো নিয়ে কথা হবে এবং সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে একটি ‘দুর্বল সরকার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় নেই, তারা দুর্বল সরকার। তাদের পেছনে কোনো দল নেই, শক্তি নেই। তবে তারা দেশকে ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলে এনেছে। তাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নির্বাচন করার জন্য।’
তিনি আরও বলেন, এই সরকার অনেকটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেছে, খালি দাবি আর দাবি নিয়ে আসছে সবাই, রাস্তায় বসে পড়ছে। সরকার বলছে এত দাবি কীভাবে তারা মানবে?
শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিএনপি। শিক্ষকদের সেই দাবিগুলো এখন মেনে নেব নাকি নির্বাচন বন্ধ না হয়ে যায়? ভয় একটাই–নির্বাচন যেন বন্ধ হয়ে না যায়।’
নির্বাচনের মাধ্যমে দ্রুত দেশে একটি নির্বাচিত সরকার আসা জরুরি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল সেনাবাহিনী ও ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ক’দিন আগে সেনাপ্রধানের সঙ্গে আমার কথা হয়, তিনি বলেন, ‘উই আর গার্ডিয়ানলেস, আমরা অভিভাবকহীন। কার কাছে বলব, নির্বাচিত সরকার না থাকলে কার কাছ থেকে সিদ্ধান্ত নেব।’ সেনাবাহিনীও চায়, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের অভিভাবক আসুক। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কবে নির্বাচন দেবেন, ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে আছে। তারাও নির্বাচিত সরকার চায়।’ তিনি বলেন, সে কারণেই নির্বাচিত সরকার দরকার, যারা জনগণের জন্য কাজ করবে।
বক্তৃতায় তিনি আশ্বস্ত করেন, যে সংস্কার বাকি থাকবে, নির্বাচিত সরকার বাকি সংস্কারগুলো নিয়ে কাজ করবে।
কেএন/টিএ