ধর্ম অবমাননার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রোববার (১৯ অক্টোবর) পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক চাঁদ মিয়া। এসময় আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তিনি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন আদালতে প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক জাকির হোসেন।
জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদনে বলা হয়েছে, এ আসামিকে পুলিশ রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে, ঘটনার দিন ও সময়ে ঘটনাস্থলে ইচ্ছে করে কুরআন শরীফ হাতে করে নিয়ে এসে সবার সামনে হাত থেকে ফ্লোরের উপর ফেলে পা দিয়ে পদদলিত করে ধর্মের বিশ্বাসের অবমাননা করে মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত হানার কথা স্বীকার করেছে। আসামি আদালতেও স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করবে বলে জানান। এমতাবস্থায় মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে তার স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা বিশেষ প্রয়োজন।
এর আগে গত ৪ অক্টোবর মধ্যরাতে রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিন সকালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ওই শিক্ষার্থী কোরআন শরীফ অবমাননা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালে প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনার কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নিজেও তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ভিডিও আপলোড করেন। পরে রাতেই উত্তেজিত একদল শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা তার বাসার নিচে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অপূর্ব পালকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এরপর রাতেই তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক হাসমত আলী বাদী হয়ে মামলার দায়ের করেন। পরদিন এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে অপূর্বকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে ১৪ অক্টোবর তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আইকে/টিএ