তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২০ অক্টোবর) নর্থ বেঙ্গল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব ঢাকা কলেজ ব্যানারে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলার শিক্ষার্থীরা।
মশাল মিছিলে অংশ নেন এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। এসময় তাদের ‘তিস্তা বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’, ‘টালবাহানা নয়, এখনই তিস্তা বাস্তবায়ন চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।
সমাবেশে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, তিস্তা শুধু একটি নদী নয়, বরং এটি উত্তরবঙ্গের মানুষের প্রাণ, জীবিকা ও স্বপ্নের প্রতীক। শুষ্ক মৌসুমে নদীটি মৃতপ্রায় হয়ে পড়ায় কৃষকরা সেচের পানি না পেয়ে দিশেহারা আর বর্ষায় ভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলের জমি। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন মানে উত্তরবঙ্গের কৃষকের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনা।
মো. রিফাত হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বাড়ি লালমনিরহাটে। তিস্তার পানি এখন বর্ষায় ভয় আর শুকনো মৌসুমে হাহাকার। এই নদীর মৃত্যু মানে আমাদের পরিবারের মৃত্যু। তাই তিস্তা এখন রাজনীতির খেলা নয়, এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। সরকার যদি এখনো নড়েচড়ে না বসে, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে উত্তরবঙ্গ মরুভূমিতে পরিণত হবে।
আবদুল কাদের নামের আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, কর্মসংস্থান হবে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে উত্তরবঙ্গ। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে আমরা শুধু আশ্বাস শুনছি, বাস্তব উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি না। তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়া মানে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া। প্রতিবার নির্বাচনের আগে তিস্তার প্রতিশ্রুতি আসে, ভোটের পর তা হারিয়ে যায়। এবার আর প্রতিশ্রুতি নয়, আমরা বাস্তবায়ন চাই।
ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক পিয়াল হাসান বলেন, তিস্তা ইস্যু কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটি জনগণের বাঁচার প্রশ্ন। উত্তরবঙ্গ বাঁচাতে হলে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প নেই।
ঢাকা কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন মানে কৃষক বাঁচানো, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জাতীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান আনিস এবং সাবেক সদস্য আমিরুল ইসলাম লিওন।
পিএ/টিএ