ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ গেল ১ জনের

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়ের লাশ দেখতে না দেওয়ার জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মো. নাসির উদ্দিন (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।

সাদেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের অনুসারী এবং বিরামপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান ও ব্যবসায়ী সাচ্চু মিয়ার পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত নাসির উদ্দিন বিরামপুর গ্রামের মৃত মইজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ইকবাল হোসেন পক্ষের অনুসারী ছিলেন।

স্থানীয়রা বলছেন, একজন সন্তানের নিজের মায়ের মরদেহ দেখতে না পাওয়ার অপমানেই এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার ৯৫ বছরের বৃদ্ধা মোসাম্মৎ বেগম মারা যান। মারা যাওয়ার পর তার ছয় ছেলের মধ্যে নোয়াব মিয়া, আবদুল হক মিয়া, ফজল হক মিয়া ও শহীদুল হক মিয়া পর দুই ভাই জহিরুল হক ও নুরুল হককে মায়ের মরদেহ না দেখিয়ে দাফন সম্পন্ন করেন। এতে ওই দুই ভাই ক্ষিপ্ত হন। এ ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং সকালে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে টেঁটা, বল্লম, লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। উভয় পক্ষের বহু ব্যক্তিকে হেলমেট, লাইফ জ্যাকেট ও ক্রিকেট প্যাড পরে সংঘর্ষে অংশ নিতে দেখা গেছে। যা সংঘর্ষের প্রস্তুতিমূলক চিত্র আরো স্পষ্ট করে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণসহ বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। সংঘর্ষে ইকবাল গোষ্ঠীর অনুসারী নাসির উদ্দিন ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘মরদেহ দেখতে না দেওয়া, পূর্ববিরোধ ও আধিপত্যের দ্বন্দ্ব মিলিয়েই এই সংঘর্ষ। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত নাসির উদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্লুটোনিয়াম চুক্তি বাতিল করলেন পুতিন Oct 28, 2025
img
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল তুরস্ক Oct 28, 2025
img
তারেক রহমানের বক্তব্যে অশ্রুসিক্ত বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা Oct 28, 2025
img
ফরিদপুরে ৫ ছিনতাইকারী গ্রেফতার Oct 28, 2025
ঢাকা-১৯: বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় ডা. সালাউদ্দিন বাবু Oct 28, 2025
রাতের ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থী Oct 28, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Oct 28, 2025
লগি-বৈঠার স্মরণে আগামীকাল সারাদেশে জামায়াতের বিক্ষোভ Oct 28, 2025
পাকিস্তানি বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় বাংলাদেশ, করাচি বন্দর ব্যবহারের অনুমোদন Oct 28, 2025
জমি বন্ধক রেখে রাকসু জিএস আম্মারের টাকা জোগাড় করেছিলেন মা! Oct 28, 2025
ভোট সুষ্ঠু না হলে বাতিল করা হবে, প্রধান উপদেষ্টার কাছে এমন ঘোষণা চায় জামায়াত Oct 28, 2025
img
শক্তি সঞ্চয় করছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, সাগর খুবই উত্তাল! Oct 28, 2025
নাসিরুদ্দিন শাহের সাক্ষাৎকারে নতুন বিতর্ক Oct 28, 2025
img
নারায়ণগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে সিগারেট ও ট্যাক্স স্ট্যাম্প জব্দ, জরিমানা ২ লাখ টাকা Oct 28, 2025
img
থাইল্যান্ডের সাথে আমাদের তুলনা করা উচিত হবে না : বাটলার Oct 28, 2025
img
রংপুরে বিএনপিতে যোগ দিলেন জাতীয় পার্টির শতাধিক নেতাকর্মী Oct 28, 2025
img
নিজেদের প্রতিষ্ঠানে নারীদের কর্মঘণ্টা আগে কমানো উচিত জামায়াতের : ড. গালিব Oct 28, 2025
img
আমার পরিচয় আমার সিনেমা, সম্পর্ক নয় : রুক্মিণী মৈত্র Oct 28, 2025
img
ছয় মেরেও হিট আউট তাসকিন, বাংলাদেশের হার Oct 28, 2025
img
মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালামের স্ত্রী Oct 28, 2025