মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রবিবার বলেছেন, তিনি আফগানিস্তান-পাকিস্তান সংকট ‘খুব দ্রুত’ সমাধান করবেন। বিবাদমান প্রতিবেশী এই দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে।
দুই দেশ একটি তিক্ত নিরাপত্তা বিরোধে জড়িয়ে আছে। এই মাসের শুরুর দিকে হওয়া সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষই বলেছে, তারা একে অপরের আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে।
এটি ছিল গত কয়েক বছরের মধ্যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক লড়াই। এই পরিস্থিতি এমন একটি অঞ্চলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে যেখানে আল-কায়েদার মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো আবার মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে।
পাকিস্তান অভিযোগ করে, আফগানিস্তান এমন গোষ্ঠীগুলোর দিকে চোখ বন্ধ করে রেখেছে যারা সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালায়। কিন্তু দেশটির তালেবান শাসকরা সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে।
তাদের মধ্যে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শনিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে শুরু হয়েছে। এই আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো—এই মাসের শুরুতে দোহাতে অর্জিত ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতিকে শান্তি এবং সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য একটি টেকসই কাঠামোতে পরিণত করা।
মালয়েশিয়ায় আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি শুনলাম যে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান শুরু করেছে’, এবং যোগ করেন, ‘তবে আমি খুব দ্রুত এটির সমাধান করব।’ তিনি থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সময় এই মন্তব্য করেন এবং পাকিস্তানের নেতাদেরকে ‘দারুণ মানুষ’ বলেও অভিহিত করেন।
কয়েক দিনের লড়াইয়ে আফগানিস্তানে ডজনখানেক মানুষ নিহত এবং শত শত আহত হয়েছিল, যদিও পাকিস্তান বেসামরিকদের ওপর হামলার কথা অস্বীকার করে বলেছে, তারা জঙ্গি এবং তাদের আস্তানাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।
তালেবান নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আরটিএ রবিবার জানিয়েছে, ১৫ ঘণ্টার ‘ধারাবাহিক আলোচনার’ পর আফগান পক্ষ একটি খসড়া জমা দিয়েছে। এই খসড়াতে জোর দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তান যেন আফগানিস্তানের ভূখণ্ড এবং আকাশসীমা লঙ্ঘন না করে এবং ‘কোনো আফগান-বিরোধী গোষ্ঠী বা বিরোধীকে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করার’ অনুমতি না দেয়।
আরটিএ আরো জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি পর্যবেক্ষণ এবং লঙ্ঘন সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের জন্য ‘একটি চতুর্মুখী চ্যানেল’ প্রতিষ্ঠা করতেও তারা প্রস্তুতি প্রকাশ করেছে। আরটিএর মতে, পাকিস্তান পক্ষ শনিবার সন্ধ্যায় আফগানদের কাছে একটি দ্বিতীয় খসড়া জমা দিয়েছে।
পাকিস্তানি সরকারের কোনো কর্মকর্তার তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ট্রাম্পের এই মন্তব্য দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বকে উৎসাহিত করবে, যারা হোয়াইট হাউসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চায়।
পাকিস্তান এই বছরের শুরুতে ভারতের সঙ্গে একটি সংকট নিরসনে ভূমিকার জন্য ট্রাম্পের প্রশংসা করেছিল, যদিও ভারত সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিল।
সূত্র : এপি
ইএ/টিএ