বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান বাবু বলেছেন, ‘সম্মানিত প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েছিলাম, আমাদের উদ্বেগগুলো জানানোর জন্য। কিন্তু তিনি আমাদের সময় দেননি। আমি ক্ষোভ নিয়েই বলছি—স্টারলিংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট পর্যায়ের কেউ এলে তিনি সময় দেন, কিন্তু ৪০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানিশিল্পের প্রতিনিধিদের সময় দেন না।’
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে মাহমুদ হাসান বাবু এসব অভিযোগ করেন।
মাহমুদ হাসান বাবু বলেন, ‘কী পরিমাণ মালামালের ক্ষতি হয়েছে, সেই তথ্য আমাদের ডিরেক্টর ফয়সাল সাহেবের কাছে আছে। আজই সেটা সবাইকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। দুটি কারণে আমরা তথ্য পাঠাতে দেরি করেছি।
প্রথমত, সরাসরি যে ক্ষতি হয়েছে, সেটা নিরূপণ করা হচ্ছিল।
দ্বিতীয়ত, এর নেতিবাচক প্রভাব বা ইমপ্যাক্ট অ্যানালাইসিস এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। এই কাজটা শেষ করতে কিছুটা সময় লাগবে।’
সময় লাগার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ধরুন, আমার একটা স্ন্যাপ বাটন বা মেটাল বাটন ওখানে নষ্ট হয়েছে। ওটার মূল্য মাত্র দুই হাজার ডলার, কিন্তু দুই হাজার আসল ক্ষতি না।
এই দুই হাজার ডলারের কারণে এই বাটনটা আবার এনে আমাকে বাই-বোর্ড শিপমেন্ট করা যাবে না; এয়ার শিপমেন্ট করতে হবে। সেখানে আবার ২০০ ডলার খরচ হতে পারে। যেহেতু আপনারা চাচ্ছেন ডিরেক্ট ক্ষতি কী হয়েছে, সেটা আমরা আজকে দিয়ে দেব। ইমপ্যাক্টটা দিতে সময় লাগবে। আমরা চাই, রাইটলি অ্যানালাইসিস করতে।’
দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, নেগোসিয়েশন স্কিল নিয়ে যে কথা বলেছেন। আজকের এই প্রেস কনফারেন্সটি আসলে তিন দিন আগেই হওয়ার কথা ছিল। গত দুই দিন আমি নিজে এবং বিকেএমইএর প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্য সংগঠনের প্রেসিডেন্টরা নিজেদের মতো করে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি।
এখন ধরুন, আপনার সঙ্গে আমার কোনো বিষয়ে আলোচনা বা নেগোসিয়েশন হবে, কিন্তু আপনি যদি আমাকে সময়ই না দেন, তাহলে সেটা সম্ভব কিভাবে? বিজিএমইএ দায়িত্ব নেওয়ার পর গত চার মাসে আমরা একাধিকবার সম্মানিত প্রধান উপদেষ্টার কাছে অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েছি, আমাদের উদ্বেগগুলো জানানোর জন্য কিন্তু তিনি সময় দেননি।
মাহমুদ হাসান বাবু আরো বলেন, ‘আমি ক্ষোভ নিয়েই বলছি—স্টারলিংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট পর্যায়ের মতো কেউ এলে তিনি সময় দেন, কিন্তু ৪০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানিশিল্পের প্রতিনিধিদের সময় দেন না। এটার দায় উনাকেই নিতে হবে। সময় না দিলে আমি আমার উদ্বেগ জানাব কিভাবে? বা নেগোসিয়েশন করব কিভাবে? আলোচনার সুযোগ না দিলে আমরা প্রমাণই করতে পারব না যে আমাদের নেগোসিয়েশন স্কিল আছে কি নেই।’
তিনি বলেন, ‘এবারের সংবাদ সম্মেলনে আমরা আমাদের লিখিত বক্তব্য আগাম দিয়েছি। সঙ্গে একটি নথি প্রদান করা হয়েছে, যেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। এ ছাড়া টিসিসিতে আমরা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিলাম এবং সরকার কিভাবে সেই অবস্থান পরিবর্তন করেছে, সেটিও দেখানো হয়েছে।’
বিদ্যমান আইনের বিধান অনুযায়ী, টিসিসিতে গৃহীত সিদ্ধান্তের তারিখও উল্লেখ করা আছে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫। বর্তমান আইন অনুযায়ী যা পরিবর্তন হয়েছে, তা একনজরে বোঝা যাবে। উদাহরণস্বরূপ, থ্রেশহোল্ডের বিষয়টি—আগে এটি ৫০ থেকে ৫০০ ছিল, যা এখন পরিবর্তিত হয়ে ২০ থেকে ৩০০ হয়েছে। এটি আপনাদের বোঝার সুবিধার জন্য আগাম লিখিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
মাহমুদ হাসান বাবু বলেন, ‘বিষয়টা এমন নয় যে আমরা সব কিছুতেই দ্বিমত পোষণ করি। আপনারা দেখেছেন, আইএলওর তিনটি কনভেনশন সম্প্রতি রেটিফাই করা হয়েছে—সেখানে আমরা কোনো দ্বিমত পোষণ করিনি, আমাদের কনসার্ন ছিল। পুরো এশিয়ায় ফিলিপাইন ছাড়া জাপান, কোরিয়া বা ভারত কেউ এই কনভেনশনগুলো রেটিফাই করেনি, কিন্তু বাংলাদেশ করেছে। তাই বলা যাবে না যে, আমরা সব সময় দ্বিমত পোষণ করি।’
আইকে/টিএ