আফ্রিকার দেশ মালির রাজধানী বামাকো দখলের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে এক জিহাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী। ভারী অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত এ গোষ্ঠীর সঙ্গে আল-কায়েদার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন রোববার (২ নভেম্বর) জানিয়েছে, মালির সামরিক জান্তা ও রুশ বাহিনী জামাত নুসরাত আল-ইসলাম আল-মুসলিমিন (জেএনআইএম) নামে এ গোষ্ঠীর অগ্রগমন ঠেকাতে পারছে না। তারা দেশটির বেশিরভাগ অংশ এখন নিজেদের দখলে নিয়েছে।
রাজধানী বামাকোতে ইতিমধ্যে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি রাজধানীর দিকে যাওয়া সড়কগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। সেনাবাহিনীর টহল গাড়ি এবং জ্বালানি ট্যাংকারে হামলা চালিয়েছে।
পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানিসহ অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের বাকামো ছাড়তে বলেছে। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য তাদের নাগরিকদের সতর্কতা দিয়ে বলেছে, ‘যদি পরিস্থিতি ভালো মনে হয় তাহলে দ্রুত বিমানে করে মালি ছাড়ুন।’ এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রও তাদের নাগরিকদের নিরাপদে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক ভিডিওতে দেখা গেছে, রাজধানী বাকামোর গ্যাস স্টেশনগুলোতে মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন চালকরা জ্বালানি নেওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইন ধরেছেন। রাজধানীর বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ জ্বালানি লুকিয়ে রাখছে। জ্বালানির অভাবে ইতিমধ্যে বাকামোর স্কুল-কলেজগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গত দুই মাসে সশস্ত্র এ গোষ্ঠী জ্বালানি সরবরাহের ওপর হামলা বাড়িয়ে দেয়। আইভরি কোস্ট এবং সেনেগাল থেকে আসা জ্বালানিবাহী ট্যাংকারে তারা একাধিকবার অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।
এরমধ্যে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দলটির ফাইটাররা প্রায় ১০০টি ট্যাংকারের একটি বহরে হামলা চালায়। ওই সময় অর্ধেকের বেশি ট্যাংকার জ্বালিয়ে দেয় তারা।
জঙ্গি গোষ্ঠী বিষয়ক সংস্থা কাউন্টার এক্সট্রেমিসম প্রজেক্ট (সিইপি) জানিয়েছে, জেএনআইএমের ফাইটাররা সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে বিপুল অস্ত্র ছিনতাই করেছে। এছাড়া তারা আধুনিক ড্রোনও উড়াতে সক্ষম।
তারা সরাসরি কোনো অবকাঠামোর ওপর হামলা না চালিয়ে কৌশল বদল করেছে বলে জানিয়েছেন সন্ত্রাসবাদ বিশ্লেষক ড্যানিয়েল গারোফালো।
তিনি সিএনএনকে বলেছেন, “জেএনআইএম তাদের অর্থনৈতিক যুদ্ধ বাড়িয়েছে। তারা সড়ক অবরোধ, চাঁদাবাজি/ কর আদায় এবং জ্বালানি আটকে দেওয়ার কাজ করছে।”
গত মাসে এক ভিডিও বার্তায় জেনএনআইএমের মুখপাত্র আবু হুদাইফা আল-বাম্বারি সাধারণ মানুষকে বলেন, তারা যেন তাদের সহায়তা করেন।
এছাড়া সেনাবাহিনীর বহরের সঙ্গে চলাচল না করার আহ্বানও জানান তিনি।
সরকারি বাহিনী এ সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের লক্ষ্য করে হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু যেহেতু তারা জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে তাই দেশটির সেনাবাহিনী খুব বেশি কিছু করতে পারছে না।
সূত্র: সিএনএন
এমআর/টিকে