দেশের ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির জন্য নিজের সরকারকেই দায়ী করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। বৃহস্পতিবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় কুর্দিস্তান প্রদেশে এক বক্তৃতায় মূল্যস্ফীতি নিয়ে সরকারের ওপর দায় চাপিয়েছেন তিনি। তার এই মন্তব্যে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত ইরানের অর্থনীতির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ওপর চাপ বৃদ্ধি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইরানের সরকারি পরিসংখ্যান কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সেপ্টেম্বর মাসে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, দেশের অতিরিক্ত প্রশাসনিক স্ফীতিই মূল্যস্ফীতির প্রধান কারণ।
তিনি বলেছেন, আমাদের সরকারই মুদ্রাস্ফীতির কারণ। আমরা সরকারকে অকারণে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলেছি। সবাই কোনো না কোনোভাবে প্রধান, ব্যবস্থাপক কিংবা এই ধরনের কোনো পদে বসেছে।
তবে দেশটিতে ব্যয় সংকোচন ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বহু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের অর্থনীতি বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। পারমাণবিক কর্মসূচির সামরিকায়ন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বৈশ্বিক বাণিজ্যে ব্যাপক বাধার সম্মুখীন হয়েছে ইরান। যদিও তেহরান বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলায় শুরু হওয়া ১২ দিনের যুদ্ধ ইরানের অর্থনীতিকে আরও চাপে ফেলেছে। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। যুদ্ধের ফলে এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া তেহরান-ওয়াশিংটন পারমাণবিক আলোচনা কার্যত ভেস্তে যায়।
ইরানের পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড রিক্রুটমেন্ট অর্গানাইজেশনের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটিতে বেসামরিক সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা ২৪ লাখেরও বেশি। তাদের মধ্যে সামরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মীরা অন্তর্ভুক্ত নন।
পেজেশকিয়ান বলেছেন, সরকারের বাজেট ঘাটতি অর্থনৈতিক চাপকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। তিনি অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে জনগণের আর্থিক চাপ লাঘবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সূত্র: এএফপি
আরপি/টিএ