ঐকমত্য কমিশন নারীকে বাদ দিয়েই গঠিত হয়েছে। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলো কাঠামোগতভাবে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী মনোনয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে সেই হার মাত্র ৫ শতাংশে নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির প্রধান ও গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পর্ষদের সদস্য তাসলিমা আখতার।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে জাতীয় নারী শক্তি আয়োজিত ‘নারীর কণ্ঠে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন রূপরেখা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তাসলিমা আখতার বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন নারীকে বাদ দিয়েই গঠিত হয়েছে। সেখানে কোনো নারী সদস্য ছিলেন না। যদি সরকার সত্যিই নারীর অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিতেন, তবে কমিশনে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হতো।’
তিনি অভিযোগ করেন, নারী সংস্কার কমিশন বাংলাদেশের নারীর নাগরিক অধিকার বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুপারিশ করেছিল, কিন্তু তা উপেক্ষিত হয়েছে।
‘ছয়টি কমিশনের মধ্যে পাঁচটি কমিশনকে বাদ দিয়ে মাত্র একটি কমিশনকে কেন্দ্র করে ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। অথচ নারী কমিশন, শ্রম কমিশন, গণমাধ্যম কমিশন সবগুলোই ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,’—বলেন তাসলিমা আখতার।
তিনি আরও বলেন, সংরক্ষিত ৫০ আসনে নারীরা মনোনীত হলেও সেখানে কোনো জবাবদিহিতা বা দায়বদ্ধতা নেই। কেউ কেউ ১০০ আসনে সরাসরি নির্বাচন চেয়েছিলেন। অথচ রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে।
তাসলিমা আখতার মনে করেন, নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন তখনই সম্ভব হবে, যখন তারা কেবল প্রতীকীভাবে নয়, সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নেতৃত্বের ভূমিকা নিতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে নারী তার নাগরিক পরিচয়ে মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে বাঁচবে। নারী কেবল মা, গৃহিণী বা পণ্য নয়—একজন পূর্ণ নাগরিক হিসেবে সংসদে ও রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখবে।
নারীর অংশগ্রহণকে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে তাসলিমা আখতার বলেন, যদি আমরা সত্যিই বাংলাদেশে পরিবর্তন আনতে চাই, তবে নারী শক্তিকে সঙ্গে নিয়েই সেই পরিবর্তনের পথে হাঁটতে হবে।
আরপি/টিকে