নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করে দেওয়ার অনুরোধ ট্রাম্পের

গাজা যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করার আহ্বান জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

চিঠিতে ট্রাম্প নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগকে “রাজনৈতিক” ও “অযৌক্তিক” বলে অভিহিত করেছেন। আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) পাঠানো এই চিঠির অনুলিপি ইসরায়েলের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করেছে।

চিঠিতে ট্রাম্প লিখেছেন, “আমি আপনাকে আহ্বান জানাচ্ছি যেন আপনি বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করেন। তিনি যুদ্ধকালীন সময়ে এক দৃঢ় ও সিদ্ধান্তমূলক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং এখন ইসরায়েলকে শান্তির পথে নিয়ে যাচ্ছেন।”

ট্রাম্প আরও উল্লেখ করেন, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কাজ করছেন, যাতে আরও দেশকে ‘বিশ্ব পরিবর্তনকারী আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর সঙ্গে যুক্ত করা যায়।
এই চিঠি আসে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজায় কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির এক মাস পর। ওই সংঘাতে ইসরায়েলি হামলায় ৬৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন, যার মধ্যে অন্তত ২০ হাজার শিশু রয়েছে। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা এই হামলাকে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ট্রাম্পের এই চিঠিকে অনেক বিশ্লেষক ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মার্কিন হস্তক্ষেপের আরেক উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য নেতানিয়াহুকে ‘পুরস্কৃত’ করার পদক্ষেপ বলেও অনেকে মনে করছেন।

এছাড়া চিঠিটি ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক ডানপন্থী নেতাদের প্রতি ক্রমবর্ধমান সমর্থনও স্পষ্ট করে। চলতি বছরের শুরুতে তার প্রশাসন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলে সরকারের জন্য ৪০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল।

চিঠিতে ট্রাম্প আরও দাবি করেন যে, তিনি “অন্তত ৩,০০০ বছরের জন্য” মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে ইতিহাস অনুযায়ী ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৪৮ সালে, আর জায়োনিস্ট আন্দোলনের সূচনা উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে। ফলে ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো ‘ভুল ও বিভ্রান্তিকর’ বলে অভিহিত করেছে।

সূত্র: আল জাজিরা, নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান

এবি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জয়কে প্রশংসায় ভাসালেন সাদমান Nov 13, 2025
img
শেখ হাসিনার রায় ঘিরে ট্রাইব্যুনালে কড়া নিরাপত্তা Nov 13, 2025
img
'দ্যা ব্যাটল অফ গালওয়ান' এ এবার নতুন রূপে হাজির হচ্ছেন সালমান খান Nov 13, 2025
img
জুলাই বিপ্লবকে স্বীকৃতি দেওয়া অস্বীকারটা করলো কে?: জিল্লুর রহমান Nov 13, 2025
img
সরকারে শাটডাউন অবসানে মার্কিন কংগ্রেসে বিল পাস Nov 13, 2025
img
শুভ জন্মদিন কথার জাদুকর Nov 13, 2025
img
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপ শুরু হচ্ছে আজ Nov 13, 2025
img
দীর্ঘ আট মাস পর মসজিদুল হারামের ইমামতিতে ফিরলেন শাইখ ড. ফয়সাল Nov 13, 2025
img
নিখুঁত মুহূর্তের অপেক্ষা নয়, আজ থেকেই শুরু করুন : শেফালী শাহ Nov 13, 2025
img
বগুড়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ Nov 13, 2025
img
রাজপথের আওয়ামী লীগ অধিক শক্তিশালী ও জনপ্রিয় : রিচি সোলায়মান Nov 13, 2025
img
নতুন প্রজন্মকে প্রেরণা দিলেন প্রেম চোপড়া Nov 13, 2025
img
কাজ মানসিক অফিসের মত, ঘরেই শান্তি: মনোজ বাজপেয়ী Nov 13, 2025
img
‘ভিলেন না থাকলে হিরোর কোনো দাম নেই’ - অমরিশ পুরী Nov 13, 2025
img
টাকা নয়, সততাই সাফল্যের আসল শক্তি: পঙ্কজ ত্রিপাঠী Nov 13, 2025
img
দিল্লির গাড়ি বিস্ফোরণ ঘটনা ‘সন্ত্রাসী হামলা’ কি না স্পষ্ট করলো ভারত Nov 13, 2025
img
হিট হলে আমি জিনিয়াস, ফ্লপ হলে কিছুই জানি না: দুলকার সালমান Nov 13, 2025
img
আলভারেজকে ঘিরে দুই ক্লাবের দ্বন্দ্ব, নতুন সিদ্ধান্তে আতলেতিকো Nov 13, 2025
img
খ্যাতির চেয়ে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই পালাক মুছালের জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন! Nov 13, 2025
img
হাসিনার বিরুদ্ধে রায়ের তারিখ জানানো হবে আজ Nov 13, 2025