আড়াই বছর আগে সবশেষ দেখায় প্রীতি ম্যাচে সেনেগালের বিপক্ষে ৪-২ ব্যবধানে হেরেছিল ব্রাজিল। কার্লো আনচেলত্তির অধীনে এবার সে প্রতিশোধ তুলে নিলো সেলেসাওরা।
লন্ডনে শনিবার (১৫ নভেম্বর) এস্তেভাও উইলিয়ান ও ক্যাসেমিরোর গোলে সেনেগালকে ২-০ ব্যবধানে হারালো ব্রাজিল। মানেদের বিপক্ষে তিনবারের দেখায় এটি প্রথম জয় ভিনিদের। মুখোমুখি হওয়া অন্য ম্যাচে ২০১৯ সালে ১-১ গোলে ড্র করেছিল দুদল।
সবশেষ ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেও ৩-২ ব্যবধানে হেরেছিল ব্রাজিল। তাই সেনেগালের বিপক্ষে এদিন প্রথমার্ধে জোড়া গোলের লিড পেলেও সে শঙ্কা উঁকি দিচ্ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে সাদিও মানেরা বেশ কয়েকটি সুযোগও পেয়েছিল। তবে আজ আর কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
এদিন বল দখলে, আক্রমণে ও শট নেয়ার প্রথমার্ধে একক আধিপত্য ছিল ব্রাজিলের। দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালায় সেনেগাল। বল দখলেও এগিয়ে যায় তারা। তবে একাধিক শট নিলেও লক্ষ্যে ১টির বেশি রাখতে পারেনি তারা।
প্রথমার্ধের দ্বিতীয় মিনিট থেকেই আক্রমণ চালিয়েছিল ব্রাজিল। তবে ভিনিসিউস জুনিয়র, রদ্রিগো ও ম্যাথিউস কুনিয়ারা একাধিক শট নিয়েও বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। এর মধ্যে ছয় গজ দূরত্ব থেকে নেয়া কুনিয়ার একটি হেড তো বারের উপরের অংশে লেগে ফিরে আসে। অনেক চেষ্টার পর শেষমেশ এস্তেভাও’র কল্যাণে ২৮তম মিনিটে সাফল্যের দেখা পায় সেলেসাওরা। বক্সের ডানপ্রান্ত থেকে নেয়া তরুণ উইঙ্গারেরজোরালো শট আর ঠেকানোর কোনো সুযোগই পাননি সেনেগালিজ গোলরক্ষক এদুয়ার্দ মেন্ডি। ক্যাসেমিরোর পাস বক্সে সেনেগালের এক ডিফেন্ডারের পায়ে লাগার পর নাগালে পেয়ে কাজে লাগান এস্তেভাও।
এর সাত মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ক্যাসেমিরো। বক্সের খানিকটা বাইরে থেকে রদ্রিগোর নেয়া ফ্রি-কিক ক্রস বক্সের ছয় গজ দূরত্বে অরক্ষিত পেয়ে দেখেশুনে কোনাকুনির শটে জালে জড়ান এ মিডফিল্ডার।
৪৫তম মিনিটে গোল শোধের সুযোগ এসেছিল সেনেগালের সামনে। তবে ব্রাজিলের রক্ষণের নৈপুণ্যে একাধিকবার শট নিয়েও ব্যর্থ হয় সেনেগালিজরা। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে দারুণ একটি সেভ দিয়ে ব্রাজিলের জাল অক্ষত রাখেন গোলরক্ষক এদেরসন মোরালেস।
দ্বিতীয়ার্ধে লড়াই জমিয়ে তোলে সেনেগাল। এর মধ্যে ৫০তম মিনিটে গোলরক্ষক এদেরসনের ভুলে প্রায় গোল হজম করতেই বসেছিল ব্রাজিল।
সতীর্থের ব্যাকপাস ক্লিয়ার করতে দেরি করেন এদেরসন। এগিয়ে গিয়ে চাপ প্রয়োগ করেন নিকোলাস জ্যাকসন। তাতে বল সতীর্থকে পাস দিতে গেলেও পেয়ে যান ইলিম্যান এনদিয়ায়ে। তবে তার আলতো ছোঁয়ার শট বারে লেগে বাইরে চলে যায়। পাঁচ মিনিট পর একই ভুল করে বসছিলেন সেনেগালিজ গোলরক্ষক মেন্ডি। তবে এবার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি রদ্রিগো। ৬১তম মিনিটে রদ্রিগোও আরও একবার গোল আদায়ের চেষ্টা করেন। তবে তার শটটি বারের খুব কাছ ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। পরের মিনিটে অ্যান্তোনি মেন্ডির ডান প্রান্ত থেকে বাড়ানো ক্রস একটুর জন্য জালে জড়াতে পারেননি মানে।
৭০তম মিনিটে গোল পেতে পেতেও পাওয়া হয়নি ব্রাজিলের। গোলমুখে ভিনি পাস দিয়েছিলেন এস্তেভাওকে। তবে তার কাছে বল পৌঁছানোর আগেই কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করে নেন জ্যাকবস। ৮২তম মিনিটে রদ্রিগো ও এস্তেভাওকে বদলি করে লুকাস পাকেতা ও লুইজ হেনরিককে মাঠে নামান আনচেলত্তি। আর শেষদিকে ভিনির বদলি নামানো হয় ফ্যাবরিকো বুনোকে। তবে তারা কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। তাতে ২-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ব্রাজিলকে।
সাধারণ চোখে এটি ফিফা প্রীতি ম্যাচ হলেও ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে শিষ্যদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন আনচেলত্তি। আগামী ১৮ নভেম্বর তিউনিসিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বছর শেষ করবে সেলেসাওরা।
আইকে/টিএ