বরিশাল: জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের রায় ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, সাংবাদিকদের মতো আগামীকাল রায় (শেখ হাসিনার মামলার রায়) নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল কী রায় দেবে সেটা তো আমরা জানি না। তবে রায় যাই দিক, সেটা কার্যকর হবে এবং জনগণ এটা মেনে নেবে।
রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে বিভাগের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনটা যেন ফ্রি-ফেয়ার, ক্রেডিবল এবং উৎসবমুখর হয় এ আশা রয়েছে। এ বিষয়ে মাঠ প্রশাসন ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে এবং নিচ্ছে।
নির্বাচনটা শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটার মধ্যে আরও স্টেকহোল্ডার রয়েছে। যেমন নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দলগুলো এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জনগণ। জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হবে তখন কোনো কিছু থামিয়ে রাখা যাবে না। রাজনৈতিক দলগুলো এবং গণমাধ্যম যে নির্বাচনমুখী হয়েছে এটা ভালো দিক। কিছু কিছু এলাকায় রাজনৈতিক বেশ কিছু দল তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছন এটাও ভালো দিক।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো বলব না, খুবই খারাপও বলব না, তবে সন্তোষজনক সেটা বলব। স্বাধীনতার পরে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি খুবই ভালো কেউ বলেনি, সবসময় নেগেটিভ দিকে থাকে। তবে বর্তমানে সন্তোষজনক। আর বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোটাই প্রস্তুত।
বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি দুটি পক্ষের মধ্যে হয়েছে, তারা নিজেরাই সেটি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। তবে এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যেন না ঘটে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে, তবে এক্ষেত্রে উভয় পক্ষ বসে যেন একটা সমাধানের দিকে যায় সেই আশা আমি করব।
পেঁয়াজের দাম চক্রান্তকারীরা বাড়িয়েছে
কৃষি মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পালন করা উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বরিশালে এবার প্রচুর ধান হতে দেখেছি। একসময় বরিশালকে শস্যভাণ্ডার বলা হলেও এখন তা রংপুর, দিনাজপুরের দিকে চলে গেছে কিন্তু এবারের ফসল দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দামটা চক্রান্তকারীরা বৃদ্ধি করেছে, কিন্তু তারা সফল হবে না। কারণ সামার অনিয়ন যেটা রয়েছে সেটা দুই-চার দিনের মধ্যে ওঠানো শুরু হয়ে যাবে। আপনারা শুনে আশ্চর্য হবেন যে প্রায় দুই হাজার লোক পেঁয়াজ আমদানির জন্য আবেদন করেছে। প্রযুক্তির কারণে অন্যান্য বারের মতো এবার কৃষকরা সব পেঁয়াজ বাজার ছাড়েনি, পেঁয়াজ আছে আর এজন্যই পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
তিনি বলেন, এবারে প্রচুর সবজি হয়েছে, শুধু দাম বৃদ্ধির বিষয়ে নয় কমার কথাও বলতে হবে। কারণ কৃষক যে কিছু পাচ্ছে না সেটা ভুলে গেলে চলবে না। শীতের সবজি পুরোপুরি ওঠা শুরু হয়নি, উঠলে দাম আরও কমে যাবে।
এমকে/এসএন