বলিউডে যারা স্পষ্ট কথা বলতে দ্বিধা করেন না, তাদের মধ্যে রিচা চাড্ডার নাম আলাদা করে উঠে আসে। পর্দায় যেমন শক্তিশালী চরিত্রে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তেমনই বাস্তব জীবনেও নিজের মতামত প্রকাশে কখনও পিছু হটেননি। জন্মদিনের দিনে তাই আবারও ফিরে দেখা হচ্ছে সেই সব মন্তব্য, যা বারবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনে দিয়েছে তাঁকে।
নারীবাদ নিয়ে রিচার অবস্থান শুরু থেকেই স্পষ্ট। ছোটবেলা থেকেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার চাপে বড় হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তিনি প্রকাশ্যে এনেছেন। তার কথায়, সমাজ তাকে শিখিয়েছিল একজন নারীর সাফল্য মানে বিয়ে আর সংসার। এই ধারণা ভেঙে তিনি বুঝেছিলেন, নারীবাদ মানে পুরুষকে ছোট করা নয়, বরং নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা। এই বক্তব্যই বহুবার তাঁকে প্রশংসা ও সমালোচনা দুটোরই মুখোমুখি করেছে।
সবচেয়ে বেশি বিতর্ক তৈরি হয়েছিল কন্যাসন্তানের জন্মের পর তার এক মন্তব্যকে ঘিরে। ভারতে মেয়ের জন্ম হওয়ায় বন্দুক রাখার কথা বলেছিলেন তিনি। যদিও পরে নিজেই স্পষ্ট করেন, এই মন্তব্য আসলে সমাজের বাস্তবতাকে তুলে ধরার জন্য। তার বিশ্বাস, অস্ত্র নয় মেয়েকে দৃঢ়চেতা ও আত্মবিশ্বাসী করে তোলাই আসল লড়াই।
মাতৃত্বের অভিজ্ঞতা নিয়েও রিচা চুপ থাকেননি। স্বাভাবিক প্রসবে সন্তানের জন্মের কথা সমাজমাধ্যমে লিখতেই কটাক্ষের মুখে পড়েন তিনি। তখন কোনও রাখঢাক না রেখেই জবাব দেন অভিনেত্রী। তাঁর ভাষায়, নিজের শরীর, নিজের সন্তান নিয়ে কথা বলার অধিকার কারও অনুমতির অপেক্ষা করে না। নারী স্বাধীনতা তাকে এই স্পষ্টতাই শিখিয়েছে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিবাদেও রিচা বরাবর সক্রিয়। জওহুরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের হিংসার ঘটনার প্রতিবাদে মিছিলে হাঁটার জন্য তাকে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে, এমনকি দেশদ্রোহীর তকমাও জুটেছিল। তবু নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি তিনি।
চেহারা ও সৌন্দর্য নিয়েও বলিউডের প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে সরব রিচা। তথাকথিত নায়িকাসুলভ চেহারার বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বারবার বলেছেন, শরীর নিয়ে কটাক্ষ মানসিক অসুস্থতারই প্রকাশ। ঐশ্বর্যা রাইয়ের মতো অভিনেত্রীকে নিয়ে ট্রোলিংয়ের প্রতিবাদেও মুখ খুলেছিলেন তিনি।
এই সব মন্তব্য আর অবস্থান মিলিয়েই রিচা চড্ডা শুধুই একজন অভিনেত্রী নন, বরং বলিউডে এক স্পষ্ট কণ্ঠস্বর। জন্মদিনে তাকে ঘিরে আলোচনা তাই শুধু অভিনয়ের জন্য নয়, তার নির্ভীক বক্তব্যের জন্যও।
আরপি/এসএন