ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্ক শুধু রাজনীতি বা সীমান্তেই সীমাবদ্ধ নয়, তার ছায়া পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনেও। সাম্প্রতিক সময়ে জম্মু-কাশ্মিরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর ভারতীয় মহলে পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি আরও জোরালো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিরপেক্ষ ভেন্যুতেও খেলার বিরোধিতা করেছেন ভারতীয় জাতীয় দলের কোচ গৌতম গম্ভীর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি’র এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন গম্ভীর। সেখানে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ভারতীয় এই কোচ জবাব দেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে, (নিরপেক্ষ ভেন্যুতেও খেলা নিয়ে) সম্পূর্ণভাবে না। যতক্ষণ না সব ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো সম্পর্কই চলমান থাকা উচিৎ নয়।’
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরে পেহেলগাম এলাকায় বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন। যার বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। ওই ঘটনায় পাকিস্তান সরাসরি জড়িত বলে দাবি করে আসছে ভারত। যদিও তাদের প্রতিবেশি দেশটি সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে উভয় দেশই কূটনৈতিক দিক থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে পরস্পর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এবার তার রেশ পড়তে চলেছে ক্রিকেটের ২২ গজেও। উভয় দেশ ২০১৩ সালের জানুয়ারির পর থেকে আর কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেনি। এশিয়া কাপ ও আইসিসি ইভেন্টেই কেবল দেখা মেলে ভারত-পাকিস্তানের।
এদিকে, চলতি বছর মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং তারপর রয়েছে ছেলেদের এশিয়া কাপ। ২০২৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মাটিতে যৌথভাবে হবে। তবে ভারত কিংবা পাকিস্তান যে দেশেই টুর্নামেন্ট থাকুক না কেন, দেশ দুটি ২০২৭ সাল পর্যন্ত নিরপেক্ষ ভেন্যুতেই খেলার সম্মতি দিয়েছিল। এই চুক্তির শুরুটা হয়েছে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে। তবে পেহেলগামের ঘটনায় সেসব টুর্নামেন্টেও ভারত-পাকিস্তান পরস্পর মুখোমুখি হওয়া নিয়ে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গৌতম গম্ভীর বলছেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমরা কোথায় খেলব না খেলব সেই সিদ্ধান্ত সরকারের হাতেই রয়েছে। আমি আগেও বলেছি, কোনো ক্রিকেট ম্যাচ, বলিউড কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের পারস্পরিক সম্পর্কই ভারতীয় নাগরিক ও সৈন্যদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না। ম্যাচ চলমান থাকবে, সিনেমাও তৈরি হবে, গায়করা নিজেদের মতো করে পারফর্ম করবেন, কিন্তু পরিবারের কোনো সদস্যকে হারানোর কাছাকাছি কিছুই হতে পারে না।’
পাকিস্তানের সঙ্গে খেলার বিষয়টি আবারও ভারতীয় সরকার ও বিসিসিআইয়ের হাতেই ছেড়ে দিলেন সাবেক এই অধিনায়ক ও বর্তমান কোচ, ‘এসব বিষয় আমার হাতে নেই, বিচার করার দায়ভারও আমার নয়। এটি বিসিসিআইয়ের দায়িত্ব এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সরকার কী চায়, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে আমরা কোথায় খেলব কি খেলব না। তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই আমরা মেনে নেব এবং এর সঙ্গে আর কোনো রাজনীতিকরণ করবেন না।’
টিএ/