চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪টি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে রেলপথ অবরোধ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চারটি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবিতে এবার রেলপথ অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকাস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমিতি। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেন সমিতির নেতারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অবহেলিত এই জনপদের অনেক নাগরিক ব্যবসা, চাকরি ও লেখাপড়াসহ নানাবিধ কাজে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করেন। কিন্তু এই জেলা থেকে একটি মাত্র ট্রেন বনলতা রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলেও তাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জনগণের তুলনায় আসন সংখ্যা তুলনামূলকভাবে সীমিত। এতে এই জেলার জনগণের ভোগান্তির শেষ থাকে না। ঢাকা থেকে অনেক ট্রেন রাজশাহী রেলস্টেশন পর্যন্ত এলেও এক ঘণ্টার দূরত্বে তা চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত আসে না। আর তাই ভোগান্তি নিরসনে এবং যাতায়াত সহজলভ্যে রাজধানী ঢাকার সাথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আন্তঃনগর ট্রেন পদ্মা, ধূমকেতু, সিল্কসিটি ও মধুমতি চলাচলের যাত্রাপথ সম্প্রসারিত করে আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন পর্যন্ত যাত্রাপথ বর্ধিতের দাবি দীর্ঘদিন যাবৎ জানিয়ে আসছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী।

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনে রেলপথ অবরোধ করেন জেলাবাসী। পরে ১০টা ৪৫ মিনিটে যাত্রীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি শেষ করে বেলা সাড়ে ১ টা পর্যন্ত রেলস্টেশনে অবস্থান নেন তারা। এ সময় রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য দেন।

ঢাকাস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি ও রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলামের সভাপত্বিতে এ সময় বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমান, নায়েবে আমির ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুখলেসুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আন্দোলনের সদস্য সচিব ইকবাল আহমেদ, জেলা ক্রীড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, পেশাজীবী সমিতির সভাপতি মাইনুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন হোসেন, কাজেম আলীসহ প্রমুখ।

নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, অন্তঃনগর ট্রেনের দাবি আজকে আমাদের প্রধান দাবি। এই দাবি জানিয়েই শেষ করতে চাই না বরং আন্তঃনগর ট্রেন চালুর পাশাপাশি এই ট্রেন স্টেশনকে উন্নত ও আধুনিক করতে হবে। এখানে জংশন করতে হবে যেন যতগুলোই ট্রেন এই স্টেশনে আসুক না কেন জটের সৃষ্টি না হয়। এছাড়া সোনামসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল আমরা দেখতে পাই। তাই এই মহাসড়কটি ছয় লাইনে উন্নত করতে হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য আমাদের দাবিগুলো অবিলম্বে মানতে হবে। তাছাড়া আমি বিশ্বাস করি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার চাঁপাইনবাবগঞ্জের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণ করতে বাধ্য হবে।

পরে একই দাবিতে কালেক্টরেট চত্বরে মানববন্ধন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসককে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার ওবায়দুল্লাহ বলেন, ঢাকাস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমিতির ব্যানারে মল্লিকা কমিউটার ট্রেন ঘেরাও কর্মসূচির কারণে মল্লিকা কমিউটার ট্রেনটি প্রায় ৩০ মিনিটি লেটে ছেড়ে গেছে। সাধারণত এই ট্রেনটি ১০টা ১৫ মিনিটে ছাড়ে, কিন্তু অবরোধের কারণে ১০টা ৪৫ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন যাবত চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী চারটি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর দাবী জানিয়ে আসছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী। গতকাল বুধবার (১৪ মে) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সুজনের ব্যানারেও চাঁপাইনবাগঞ্জ রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল।

আরআর/এসএন

Share this news on: