গরমে বেশি ঘামানোর কারণ কী, রইল সমাধান

গ্রীষ্মের এই গরমে দুপুর বেলায় রাস্তায় বের হওয়া অনেক কষ্টকর। জামা ভিজে যাচ্ছে ঘামে, শরীর থেকে বের হওয়া এসব ঘামের গন্ধে তৈরি হয় অস্বস্তি। এই সময়ে অতিরিক্ত ঘাম একেবারেই স্বাভাবিক বিষয়। তবে সেটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখাটাও জরুরি।

চলুন, জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত ঘামের পেছনে কারণ, প্রতিকার এবং দৈনন্দিন জীবনে কিছু সহজ পরিবর্তনের টিপস।
অতিরিক্ত ঘামের প্রধান কারণ

আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ হচ্ছে ঘাম। যখন গরম পড়ে বা শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, তখন শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে আসে এবং আমাদের শরীর ঠাণ্ডা রাখে। কিন্তু কারো কারো ক্ষেত্রে এই ঘাম স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যায়।
কেন এমনটা হয়—

পরিবেশজনিত কারণ : গরম বা আর্দ্র আবহাওয়ায় শরীর বেশি ঘামে। বিশেষ করে রোদের মধ্যে বেশি সময় কাটালে ঘাম হওয়াটা খুব স্বাভাবিক।
হরমোনের গোলমাল : থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যায় (বিশেষত হাইপারথাইরয়েডিজম) অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।

মানসিক চাপ : রাগ, দুশ্চিন্তা, উত্তেজনা বা ভয় লাগলে শরীরের ঘামগ্রন্থি অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে যায়।
কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ বা কেমিক্যালের প্রভাবেও বেশি ঘাম হতে পারে।
 
অতিরিক্ত ঘাম হলে শরীর কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়
অনেকেই অতিরিক্ত ঘামকে সাধারণ ভেবে পাত্তা দেন না। কিন্তু এটি ঠিক নয়। কারণ, অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীর থেকে শুধু পানি নয়, প্রয়োজনীয় লবণ ও খনিজ বের হয়ে যায়। এতে করে ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, এমনকী ডিহাইড্রেশনও হতে পারে।
তাই ঘাম হলে সঙ্গে সঙ্গে সেই ঘাটতি পূরণ করাও জরুরি।

কী খাবেন, কী খাবেন না
পর্যাপ্ত পানি, লেবু পানি, ডাবের পানি, গ্লুকোজ, ওরস্যালাইন, শসা, তরমুজ, খিরসা, খেজুর–যেগুলো শরীর ঠাণ্ডা রাখে, লবণযুক্ত পানীয় খাবেন।
তবে অতিরিক্ত ঝাল-মসলা দেওয়া খাবার, ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত চা-কফি, ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
 
ঘাম কমানোর ঘরোয়া টিপস
অতিরিক্ত ঘামকে একেবারে বন্ধ করা না গেলেও কিছু নিয়ম মানলে তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
প্রতিদিন গোসল করুন। সকালে ও রাতে গোসল করলে শরীর ঠাণ্ডা থাকে।
হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। সুতির জামাকাপড় ঘাম শুষে নেয়।
ঘামরোধী ডিওডরেন্ট বা অ্যান্টিপার্সপির্যান্ট ব্যবহার করুন। পারফিউম নয়, মেডিক্যাল ডিওডরেন্ট ব্যবহার করাই ভালো।
পায়ে ঘাম হলে শুষে নেওয়ার মোজা ও খোলা স্যান্ডেল পরুন। এতে পায়ে দুর্গন্ধ বা ফাংগাল ইনফেকশন কমে।
বেবি পাউডার বা ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করুন। বিশেষ করে গলা, বগল, পায়ের পাতায়।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ দরকার
যদি ঘাম খুব বেশি হয়, এমনকি ঠাণ্ডা জায়গায় বসেও, ঘামের সঙ্গে মাথা ঘোরা, বমি ভাব বা অজ্ঞান হওয়ার উপক্রম হয়, ঘামের গন্ধ খুব বেশি হয় বা চামড়ায় ফুসকুড়ি উঠে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এ ছাড়া যদি মনে হয় হরমোনের গোলমাল আছে সে ক্ষেত্রে হরমোন বিশেষজ্ঞ বা অ্যান্ডোক্রিনোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। অনেক সময় থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, নিউরোলজিক্যাল সমস্যা থেকেও অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।

এমআর


Share this news on:

সর্বশেষ

img
ঠাকুরগাঁও সীমান্তে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে আটক এক যুবক May 16, 2025
img
‘আমার কাছে মনে হয়েছিল পরিচালক যেন ভিক্ষা করছেন’ May 16, 2025
img
বিমানবন্দরে বাজে ব্যবহারের শিকার স্টার্ক, খেলবেন না আইপিএল May 16, 2025
img
সুস্থ থাকতে রসুনের ৭ উপকারী ব্যবহার May 16, 2025
img
২ বিভাগের ৮ জেলায় আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা May 16, 2025
img
বরিশালে বিএনপি নেত্রীর বাসায় হামলা, নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল May 16, 2025
img
নালিতাবাড়ীর লোকালয় থেকে সজারুর ছানা উদ্ধার May 16, 2025
img
ডিজিটাল রূপান্তরে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা May 16, 2025
img
প্রথম প্রান্তিকে জাপানের জিডিপি শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস May 16, 2025
img
বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায়: হাসনাত আব্দুল্লাহ May 16, 2025