শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ঈদ-উল আযহার পূর্বেই ১০০ শতাংশ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়াসহ শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে লংমার্চ টু সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে যাবার সময় পুলিশের বাধায় পড়েন শিক্ষকরা।
বুধবার (২১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শিক্ষকের একটি বিশাল মিছিল সচিবালয়ের দিকে রওনা হয়। সেসময় প্রেস ক্লাব ও সচিবালয়ের মধ্যবর্তী সড়কেই তাদের পথ আটকে দেয় পুলিশ।
এ সময় শিক্ষকরা ব্যারিকেড সরানোর চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও বেশিসংখ্যক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন এবং শিক্ষকদের ঘিরে ফেলেন।
হাতে থাকা মাইক দিয়ে শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজন পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে শান্ত স্বরে বলেন, দয়া করে আমাদের মারবেন না। আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে সচিবালয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজনে আপনারা আমাদের দাবিগুলো শুনুন। যদি মনে করেন আমাদের দাবি অযৌক্তিক, আমরা ফিরে যাব। তবুও আমাদের গায়ে হাত তুলবেন না। এর আগে শিক্ষকদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, আজ যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। যদি এমন হয়, তবে তা ভালো হবে না।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ শিক্ষকদের এলাকা ছাড়তে বললেও, শিক্ষকদের যুক্তিসংগত বক্তব্য শুনে তাদের কঠোরতা কিছুটা কমে আসে। তবে, ব্যারিকেড ধরে দাঁড়িয়ে থেকে শিক্ষকের সচিবালয় অভিমুখে যেতে বাধা দেয় পুলিশ এবং তাদের দাবি শুনতে থাকে। শিক্ষকরাও ব্যারিকেডের ওপাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের দাবি আদায়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এ সময় আইন মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির প্রসঙ্গ টানা হয়, যেখানে আসিফ নজরুল স্বাক্ষর করেছেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে শিক্ষকদের নিয়োগে কোনো আইনি জটিলতা নেই এবং তাদের নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে, কারণ তারা উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা ও মেধাতালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছেন।
শিক্ষকরা বলেন, আমরা পুলিশ ভাইদের বলতে চাই, হাইকোর্টের রায় আমাদের পক্ষে। আপনারা কি হাইকোর্টের রায় মানবেন না? যদি মেনে থাকেন, তাহলে আমাদের কথা শুনুন। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে আমাদের প্রস্তাবনা পেশ করতে চাই। এখন আপনারা কি আমাদের এভাবে যেতে দেবেন, নাকি কোনো ব্যবস্থা করে দেবেন— এটা আপনাদের সিদ্ধান্ত।
প্রায় বিশ মিনিট ধরে শিক্ষকরা ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ শিক্ষকদের প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে সরিয়ে দেয়। সেখানেও শিক্ষকরা স্লোগান অব্যাহত রাখেন। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েকজন শিক্ষক প্রতিনিধিকে সচিবালয়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরআর/টিএ