সিনেমা জগতে নারীরা এখন আর কেবল পর্দার সামনে সীমাবদ্ধ নন; তারা ক্যামেরার পেছনেও নিজেদের দক্ষতা ও সৃজনশীলতা দিয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছেন। নারীরা এখন গল্প বলার ক্ষমতায় পুরুষদের সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাদের নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো বিশ্বব্যাপী দাপটের সঙ্গে চলছে। সেই সঙ্গে বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ সব উৎসবেও নারী নির্মাতারা থাকছেন এগিয়ে।
এবারের কান চলচ্চিত্র উৎসবেও নারী নির্মাতাদের পদচারণা চোখে পড়ার মতো। আর একজন নারী অভিনেত্রী হয়ে নারী নির্মাতার প্রতি আস্থা রাখার ক্ষেত্রে নিকোল কিডম্যানকে সবার চেয়ে এগিয়েই রাখতে হয়। বরাবরই নারী শক্তির প্রতি আস্থা দেখিয়েছেন এ হলিউড তারকা। এখন পর্যন্ত ২৭ জন নারী নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। কানের মঞ্চে গর্বের সুরেই জানালেন এ কথা।
২০২৫ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে নিকোল কিডম্যানকে ভূষিত করা হয়েছে মর্যাদাপূর্ণ ‘উইমেন ইন মোশন অ্যাওয়ার্ডে’। এ পুরস্কার কিডম্যানের চলচ্চিত্র জগতে দীর্ঘদিনের পথিকৃৎ অবদান, নারী-পুরুষ সমতার প্রতি প্রতিশ্রুতি এবং বয়স ও লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার নিরলস লড়াইকে স্বীকৃতি জানায়। পুরস্কার গ্রহণের সময় নিকোল তাই আওয়াজ তুললেন নারী শক্তির পক্ষে।
নিকোল বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত ২৭ জন নারী নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেছি।’ এ কথা বলামাত্রই কানের বিশাল অডিটোরিয়াম করতালিতে ফেটে পড়ে। এরপর তিনি বলেন, ‘নারীদের শুধু সুযোগ দিলেই হয় না, তাদের পাশে থাকতে হয়—উদ্যোক্তা, পরামর্শদাতা ও সহযাত্রী হয়ে। আমি চেয়েছিলাম এটা সম্ভব করতে।’ নিকোল আরো বলেন, 'একসময় বলা হতো এই মুভিটা কি কোনো নারী পরিচালনা করতে পারবে? তখন তালিকায় খুব বেশি নাম থাকত না। সেটা বদলানো দরকার ছিল এবং সেটা এখন হয়েছে।'
নিকোল কিডম্যান সরাসরি চলচ্চিত্র শিল্পে প্রচলিত দ্বৈত মানদণ্ডের দিকে আঙুল তুলে আরও বলেন, ‘পুরুষরা দ্বিতীয় সুযোগ পায়। কিন্তু একজন নারী পরিচালকের একটি সিনেমা না চললেই মনে করা হয় তার ক্যারিয়ার শেষ।’
এখনো ফুরিয়ে যাননি জানিয়ে নিকোল বলেন, ‘আমি এখনো শেষ হইনি। আপনি একটা নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছালে মানুষ ভাববে আপনি শেষ। কিন্তু আপনি শেষ না। দ্বিতীয় বা তৃতীয় অধ্যায় থাকতেই পারে। অভিজ্ঞতার মধ্যে শক্তি আছে এবং আমাদের সেটার ওপর বিনিয়োগ অব্যাহত রাখা উচিত।’
কানের মঞ্চে নিকোল কিডম্যান মনে করিয়ে দিলেন ২০১৭ সালে তার নেওয়া এক সাহসী অঙ্গীকারের কথাও। প্রতি ১৮ মাসে একবার একজন নারী পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সেই প্রতিশ্রুতি। সেই প্রতিশ্রুতি আজ রূপ পেয়েছে বাস্তবে।
আরআর/টিএ