বিশ্বব্যাপী ‘মিস্টার বিস্ট’ নামে পরিচিত ইউটিউব সেনসেশন ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর জিমি ডোনাল্ডসন এখন বিলিয়নিয়ারদের কাতারে। মাত্র ২৭ বছর বয়সে ইউটিউব থেকে ১০০ কোটি টাকা আয় করে বর্তমানে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ স্বনির্ভর বিলিয়নিয়ার তিনি।
সবচেয়ে বড় বিষয়, ৩০ বছরের নিচে থাকা তিনিই একমাত্র বিলিয়নিয়ার যিনি উত্তরাধিকার সূত্রে কোন সম্পত্তি পাননি।
উত্তর ক্যারোলিনার নিজ বাড়ি থেকে ইউটিউবে যাত্রা শুরু করা এই তরুণ ‘আই কাউন্টেড টু এ হান্ড্রেড থাউজেন্ড’ ভিডিওর মাধ্যমে প্রথম ভাইরাল হন ২০১৭ সালে।
ভিডিওটি ধারণ করতে তার সময় লেগেছিল ৪৪ ঘণ্টা এবং ভিডিওটি ইতোমধ্যে ইউটিউবে ৩১ মিলিয়নের বেশি ভিউ পেয়েছে।
দারুণ সব কনটেন্ট ভক্তদের উপহার দিয়ে, ২০২৪ সালে ফোর্বসের ‘টপ ক্রিয়েটর’ তালিকায় শীর্ষস্থানীয়দের একজন হিসেবে উঠে আসেন মিস্টার বিস্ট। ফোর্বস সে সময় তার সম্পদ ৮৫ মিলিয়ন ডলার হিসেবে উল্লেখ করেছিল।
তবে ২০২৪ সালের এক মামলার নথি থেকে জানা যায়, শুধু ২০২৩ সালেই তার আয় ছিল ২২৩ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৭০০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হয়।
তার ব্যবসায়িক উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে ‘বিস্ট বার্গার’—২০২০ সালে চালু হওয়া একটি ডেলিভারি-ভিত্তিক ফাস্টফুড চেইন, যা থেকে মাসে ২৩ লাখ ডলার আয় আসে।
এরপর ‘ফিস্টেবলস’ নামে একটি চকোলেট কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। যেখান থেকে প্রথম কয়েক মাসেই ১ কোটি ডলারের বেশি আয় করেন এই ইউটিউবার।
এ ছাড়া ‘জুস ফান্ডস’ নামের একটি তহবিল প্রতিষ্ঠা করেছেন মিস্টার বিস্ট।
এই তহবিল থেকে উদীয়মান কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য বিনিয়োগ করা হয়।
এছাড়া, ক্রিপ্টোকারেন্সি ও প্রযুক্তিখাতেও রয়েছে তার উপস্থিতি। বিটকয়েন ও ক্রিপ্টো পাঙ্কস এনএফটিতে প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে তার।
শুধু অর্থ উপার্জন নয় দাতা হিসেবে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন মিস্টার বিস্ট। ‘বিস্ট ফিলানথ্রপি’ নামে একটি অলাভজনক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
এই সংস্থা থেকে অসহায় মানুষদের বাড়ি, গাড়ি, অর্থ বিতরণ করেন এই জনপ্রিয় ইউটিউবার।
২০২৩ সালে তিনি ১,০০০ জন অন্ধ মানুষের চোখের ছানি অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করে আলোচনায় আসেন। এ নিয়ে তখন কিছুটা সমালোচনা হলে তিনি জানান, ‘আমি আমার জীবদ্দশায় সমস্ত অর্থ দান করব, এক পয়সাও রাখব না।’
২০১৯ সালেও তিনি বলেছিলেন, ‘অনেক টাকা উপার্জন করব, এবং সেটা দিয়ে যতটা সম্ভব ভালো কাজ করব।’
মিস্টার বিস্ট এর ইউটিউব যাত্রা শুরু হয় মাত্র ১৩ বছর বয়সে। শুরুতে ‘মাইনক্রাফট’, ‘কল অফ ডিউটি’-এর মতো গেমিং ভিডিও, ইউটিউবারদের সম্পদ অনুমান, রিয়্যাকশন ও ফানি ভিডিও বানাতেন তিনি।
২০১৬ সাল নাগাদ তার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ছিল ৩০,০০০-এর নিচে। এরপরই তিনি কলেজ ছেড়ে পুরোপুরি ইউটিউবকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।
এসএন