১৯৯১ সালে, বলিউডে একসঙ্গে পথচলা শুরু করেছিলেন অজয় দেবগন ও অক্ষয় কুমার। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দুজনেই উপহার দিয়েছেন অসংখ্য হিট ছবি। তবে কোভিড-পরবর্তী সময়ে সিনেমার বাজারে দৃশ্যপট অনেকটাই বদলে গেছে। এই নতুন বাস্তবতায় দর্শকের আস্থা, গল্পের গভীরতা ও অভিনয়ের ভারসাম্যে স্পষ্টভাবে এগিয়ে রয়েছেন অজয় দেবগন, আর ধারাবাহিক ব্যর্থতায় পিছিয়ে পড়ছেন অক্ষয় কুমার।
২০২০ সালের পর দুই তারকার ছবির সাফল্যের হার দেখলেই বোঝা যায় পার্থক্যটা কোথায়। অজয়ের সাফল্যের হার যেখানে ২৫ শতাংশ, সেখানে অক্ষয়ের মাত্র ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। বিষয়টা শুধু হিট বা ফ্লপ নয়, বরং এখনকার সিনেমাপ্রেমী দর্শক চাইছেন মানসম্মত গল্প, অভিনয়ের ভারসাম্য এবং বিশ্বাসযোগ্যতা—যেখানে অজয় তার নিজের জায়গা তৈরি করে নিচ্ছেন ধীর, স্থির কিন্তু পরিকল্পিতভাবে।
অজয় দেবগনের সিনেমা নির্বাচনে লক্ষ্য করা যায় বৈচিত্র্য ও পরিপক্বতা। ‘দৃশ্যম ২’-এর বুদ্ধিদীপ্ত থ্রিলার, ‘ভোলা’র অ্যাকশন-ভক্তির মিশেল, কিংবা ‘শৈতান’-এর ভৌতিক থ্রিল—প্রতিটি ছবিই আলাদা ঘরানার, কিন্তু সবার মধ্যেই আছে গল্প বলার প্রতি গভীর মনোযোগ। তিনি বছরে কম কাজ করলেও, যেটুকু করেন তা গল্প ও চরিত্রের ভিতকে গুরুত্ব দিয়ে।
অন্যদিকে অক্ষয় কুমার যেন পরিমাণের উপরেই ভরসা করছেন। বছরে একাধিক সিনেমা মুক্তি পেলেও বেশিরভাগই দর্শকের মনে স্থায়ী প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ। দেশাত্মবোধক গল্পের অতিরিক্ত ব্যবহার, একের পর এক রিমেক, আর আগেভাগে বিপুল প্রচারণা—সব মিলিয়ে অনেকের চোখে এখন তিনি হয়ে উঠেছেন ‘অতিরিক্ত দেখা’ একজন তারকা। দর্শক বলছেন, “সবখানেই তিনি, সেটাই এখন ক্লান্তির কারণ।”
এখনকার বাস্তবতায়, যেখানে সিনেমা মানেই শুধু বড় স্কেল নয়, বরং বড় গল্প—সেখানে অজয় নিজের অভিনয় দিয়ে দর্শকের আস্থা অর্জন করছেন। আর অক্ষয় যেন হারিয়ে ফেলছেন সেই আত্মবিশ্বাস। তাই বলিউডের বর্তমান মানচিত্রে, অভিনয় আর কনটেন্টের লড়াইয়ে স্পষ্টভাবেই অজয় এগিয়ে।
আরএ/টিএ