২০২৫ সালের মাঝামাঝি এসে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—চলচ্চিত্রের প্রকৃত শক্তি এখন আর কেবল বাজেটনির্ভর নয়। প্রভাব তৈরি হচ্ছে সাহসী গল্প, তীক্ষ্ণ সংলাপ আর হৃদয়স্পর্শী নির্মাণে। বক্স অফিসের জয়যাত্রা এখন আর ঢাকঢোলের গর্জনে নয়, বরং মুগ্ধতা তৈরি করছে নিঃশব্দে, গল্পের গভীরতায়।
এই পরিবর্তনের অন্যতম উদাহরণ ‘কেসরি চ্যাপ্টার ২’। অক্ষয় কুমার ও আর মাধবন অভিনীত এই কোর্টরুম-ভিত্তিক ছবিটি রিভিউয়ের দিক থেকে অর্জন করেছে ব্যতিক্রমী সাফল্য। বক্স অফিসে ঝড় তুলতে না পারলেও সমালোচকদের মতে, “এটা কোর্টরুম ড্রামা নয়—এটা সিনেমার পরীক্ষা।” অনেকেই বলছেন, ‘এয়ারলিফট’-এর পর এটি অক্ষয়ের সবচেয়ে প্রভাববিস্তারকারী অভিনয়।
তেলুগু ভাষার ‘কোর্ট: স্টেট ভার্সেস এ নোবডি’ একটি সাহসী ও সামাজিকভাবে প্রাসঙ্গিক কাহিনি উপস্থাপন করেছে। ব্যতিক্রমী ভঙ্গিতে নির্মিত এই ছবিটি মেট্রোপলিটন দর্শকদের মনে গেঁথে গেছে, যদিও প্রচার ছিল অপেক্ষাকৃত কম।
তামিল ছবি ‘ট্যুরিস্ট ফ্যামিলি’—আয় করেছে প্রায় ৮২ কোটি টাকা। গল্পের সহজতা ও আবেগপূর্ণ নির্মাণ একে পৌঁছে দিয়েছে প্রবাসী এবং শহরকেন্দ্রিক দর্শকের হৃদয়ে। এক সমালোচক একে বলেছেন, “সহজ সিনেমা, গভীর প্রভাব।”
মালয়ালাম ছবির ক্ষেত্রে মোহনলাল অভিনীত ‘থুদারাম’ শুরুতে জটিল প্রতিক্রিয়া পেলেও, থিয়েটারে ধীরে ধীরে আস্থা অর্জন করে। ইতোমধ্যে এর আয় ছাড়িয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। ওটিটিতে মুক্তি বিলম্বিত হচ্ছে মূলত বিশাল দর্শকচাহিদার কারণেই।
অন্যদিকে, হিন্দি ছবির তালিকায় থাকা ‘ছাভা’ প্রায় ৭৮০ কোটি টাকা আয় করলেও সমালোচকরা বলছেন—ধর্মীয় আবেগে সফল হলেও, চলচ্চিত্র হিসেবে এটি পিছিয়ে আছে। কেবল আলো নয়, আলোচনাই এখন বড় মাপকাঠি।
২০২৫ সাল তাই একদিকে বাজিমাত করা ব্লকবাস্টারের পাশাপাশি দেখিয়েছে—চুপচাপ, সাহসী, ছোট গল্পগুলোও কীভাবে বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে। এই বছর চলচ্চিত্রজগতের মূল প্রশ্ন: “কে সত্য বলছে?”—এবং সেই উত্তর মিলছে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা সব দর্শকের আবেগে, অনুভবে।
আরআর/এসএন