সম্প্রতি সাংবাদিক মাসুদ কামাল তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের তালিকা তৈরিতে চরম অনিয়ম ও জালিয়াতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি জানান, প্রকৃত শহীদ ও আহতদের বাইরে অনেকেই ভুয়া তথ্য দিয়ে নিজেদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং সরকারি আর্থিক সহায়তাও গ্রহণ করেছেন। অভিযোগ তোলা হয়েছে, কেউ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন, কেউ পারিবারিক দ্বন্দ্বে আহত হয়েছেন বা ছিনতাই করতে গিয়ে গণপিটুনিতে মারা গেছেন—তবুও তাদেরকে ‘জুলাই আন্দোলনের শহীদ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
মাসুদ কামালের ভাষ্য অনুযায়ী, এসব তথ্য একটি সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধান থেকে পাওয়া গেছে, যেখানে নির্দিষ্ট কিছু ভুয়া তালিকাভুক্ত ব্যক্তির ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।
তাঁর মতে, এই তালিকা তৈরির দায়িত্ব যাদের ওপর অর্পিত ছিল, তাঁদের মধ্যে অনেকে আন্দোলনের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত ছিলেন না। ফলে সঠিক যাচাই-বাছাই না করেই তালিকা প্রস্তুত হয়েছে। চিকিৎসা নথিপত্র জাল করে কিংবা অসত্য তথ্য দিয়ে কেউ কেউ সরকারি ভাতা, নগদ সহায়তা বা শহীদ পরিবারের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন।
এ ছাড়া তিনি জানান, প্রশাসনের দুর্নীতি, রাজনৈতিক অদক্ষতা ও সরকারের আন্তরিকতার অভাবেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির সময় যেমন অনেক জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছিল, তেমনি জুলাই আন্দোলনের ক্ষেত্রেও তা-ই দেখা যাচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অনেকেই আন্দোলনের ইতিহাস, অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি বা ঘটনার সঠিক তথ্য জানতেন না। এমনকি কেউ কেউ আন্দোলনের পরে হঠাৎ করে উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পান, যাঁদের আন্দোলনের সঙ্গে পূর্বে কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না।’
সাংবাদিক মাসুদ কামালের মতে, এই ঘটনা শুধু দুর্নীতির পরিচয়ই দেয় না, বরং আন্দোলনের ইতিহাসকেও বিকৃত করে।
প্রকৃত শহীদ ও আহতদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। সরকারের উচিত ছিল তালিকা তৈরির আগে যথাযথ যাচাই-বাছাই ও আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক ক্রসচেকিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা। তাঁর মতে, আন্তরিকতা ও স্বচ্ছতা না থাকলে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ কখনোই সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।
টিকে/টিএ