গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মৃত্যুর মিছিল, নিহত ১০৯

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর একের পর এক হামলায় আরও কমপক্ষে ১০৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এমন তথ্য দিয়েছে ভূখণ্ডটির মেডিকেল সূত্রগুলো।

এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইসরায়েল ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতির জন্য “প্রয়োজনীয় শর্ত” মেনে নিতে সম্মত হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

মঙ্গলবার নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষের সঙ্গে মিলে গাজা যুদ্ধ বন্ধে কাজ করবে এবং হামাসকেও এই প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

তবে এই ঘোষণার মধ্যেই গাজায় দেখা গেছে রক্তাক্ত এক দিন, যেখানে ইসরায়েলি হামলায় উত্তর ও দক্ষিণ গাজার বহু বসতঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। এর মধ্যে পরবর্তী সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরও নির্ধারিত রয়েছে। ট্রাম্প বলেন, “নেতানিয়াহু এই যুদ্ধ শেষ করতে চান”, যদিও বাস্তবে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা আরও বাড়িয়েছে।

আল জাজিরা বলছে, মঙ্গলবার হামলার ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মর্মান্তিক ছিল গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত খাদ্যসাহায্য কেন্দ্রে হামলা। সেখানে ক্ষুধার্ত মানুষের ভিড়ের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হন।

জিএইচএফ-এর অধীনে গত মে মাসের শেষ থেকে সীমিত সাহায্য বিতরণ শুরু হওয়ার পর থেকে, প্রতিদিনই এরকম সহিংস হামলায় প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর তাই ১৭০টির বেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ও এনজিও এক যৌথ বিবৃতিতে জিএইচএফ বন্ধের দাবি জানিয়েছে।

তারা বলেছে, “গাজার মানুষ এখন দুটি ভয়াবহ বিকল্পের মুখে — ক্ষুধায় মারা যাওয়া অথবা গুলির ঝুঁকি নিয়ে খাবার সংগ্রহ করা”। বিবৃতিতে আরও বলা হয়: “জিএইচএফ গাজার মানুষের জন্য কেবল ক্ষুধা ও গুলিবর্ষণই নিয়ে এসেছে।”

এদিকে ইসরায়েলি সেনারা গাজার উত্তরাঞ্চলের গাজা সিটিতে পুনরায় হামলা শুরু করেছে। এখানে কিছুদিন আগেই বাসিন্দাদের জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, শহরের এক স্থানে ইসরায়েলি কোয়াডকপ্টার হামলায় কমপক্ষে ৫ জন নিহত হন।

জাতিসংঘের মতে, এখন গাজার ৮২ শতাংশ এলাকা হয় ইসরায়েলি সামরিক নিয়ন্ত্রণে, নয়তো জবরদস্তিমূলক উচ্ছেদের হুমকির মধ্যে রয়েছে। গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকায় বসবাসকারী ইসমাইল বলেন, “নতুন করে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষ রাস্তায় তাঁবু খাটিয়ে বাস করছে। কোথাও জায়গা নেই।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ঘুমাতে পারি না — ট্যাংক আর বিমানের বিস্ফোরণের শব্দে চারপাশ কাঁপে। ইসরায়েল আমাদের চারপাশে, জাবালিয়া ও অন্যান্য এলাকায় ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে।”

এফপি/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
৬ ঘণ্টা পর খুলনা রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক Jul 05, 2025
img
মুন্সীগঞ্জে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল ২ মোটরসাইকেল আরোহীর Jul 05, 2025
img
হাসারাঙ্গাকে সামলানোর নতুন কৌশল খুঁজে পেল বাংলাদেশ! Jul 05, 2025
img
সংস্কার শেষে এই সংবিধানের অধীনেই দেশ চলবে: রিজভী Jul 04, 2025
img
আওয়ামী লীগ শুধু হিন্দুদের ব্যবহার করেছে মাত্র: আযম খান Jul 04, 2025
img
আগস্টে তুরস্কের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ নারী দল! Jul 04, 2025
img
ধূমপানের দৃশ্য নয়, নীতির কাছে আপসহীন অভিনেত্রী রাশমিকা! Jul 04, 2025
img
খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক তুলে নিল রাজস্ব বোর্ড Jul 04, 2025
img
বিএনপি জনগণের রাজনীতি করে, ক্ষমতার রাজনীতি করে না: ওবায়দুর রহমান চন্দন Jul 04, 2025
img
‘রামায়ণ’ হতে যাচ্ছে ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল সিনেমা Jul 04, 2025
img
দেশে টানা ৫ দিন ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস Jul 04, 2025
১০ মিনিটে সারাদিনের দেশের আলোচিত সব খবর Jul 04, 2025
img
সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে না পারা : শিবির সভাপতি Jul 04, 2025
img
জুলাই যোদ্ধাদের সনদ দেওয়া সম্ভব কিন্তু একটু ক‌ঠিন : উপদেষ্টা শারমীন Jul 04, 2025
img
অন্ধ্রপ্রদেশ-তেলেঙ্গানায় উন্মাদনা ছড়াচ্ছে ‘ওয়ার ২: প্রথম শো ভোর পাঁচটায় Jul 04, 2025
img
ভারতের আধিপত্য রুখতে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে : আব্দুস সালাম Jul 04, 2025
img
মন্দোদরী চরিত্রে পা রাখছেন কাজল? Jul 04, 2025
img
বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়লেও 'কঙ্গুভা ২' -এর দাবি ফ্যানদের Jul 04, 2025
img
যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে লেবাননে ফের হামলা চালাল ইসরায়েল Jul 04, 2025
img
পাকিস্তানের ফিল্ডিং কোচ হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ Jul 04, 2025