জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, বন্ধুগণ আপনারা প্রস্তুত হন। আগামী ৩ আগস্ট শহিদ মিনারে দেখা হবে। আমরা জুলাই সনদ, জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ।
রোববার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার ষষ্ট দিনে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা এনসিপি এ পথসভার আয়োজন করে। আর আগে নগরীর গোরহাঙ্গা রেলগেট থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে নিউ মার্কেট ঘুরে সাহেববাজারের সমাবেশে যুক্ত হয়।
তিনি বলেন, গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার বিচার আমরা দেখতে চাই। সংস্কার দেখতে চাই এবং নতুন সংবিধান দেখতে চাই। এই প্রজন্ম বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যে একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান এই দেশের মানুষকে উপহার দেবে। এই সংবিধান বাংলাদেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করবে। যেই সংবিধান ইনসাফ নিশ্চিত করবে। স্বৈরতন্ত্র এবং পরিবার তন্ত্র অবসান ঘটাতে হবে এই বাংলাদেশ থেকে। মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে আমরা নতুন রাজনীতি এবং বন্দবস্ত গড়ে তুলব।
রাজশাহী সমাবেশ জুলাই পদযাত্র ইতিহাসে স্মরণ হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যত্থানের এক বছর হতে যাচ্ছে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমরা রাজপথে নেমেছিলাম। অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমার ভাই আবু সাইদ পুলিশের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। অনেক স্বপ্ন নিয়ে রাজশাহীর ভাইয়ের শহিদ হয়েছিলেন। আমাদের স্বপ্ন কেবল শেখ হাসিনার পতন ছিল না, আমাদের স্বপ্ন ছিল একটি নতুন বাংলাদেশ। সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুনর্গঠন। কিন্তু দুঃখের কথা, ৫ আগস্টের পরে নানা শক্তির ষড়যন্ত্রে সংস্কারের পথ রুদ্ধ হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি আমাদের ভুল হয়েছিল। আমাদেরও সীমাবন্ধতা ছিল। কিন্তু আজকে আমরা আপনাদের সামনে শপথবদ্ধ। এই ভুল আমরা আর করব না। আমরা আর সুযোগ দেব না। যারা এই গণঅভ্যত্থানকে, এই সংস্কারের যাত্রাকে ব্যহত করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশের জনগণ তাদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না। ৫ আগস্ট ২০২৪ আমাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদের পতন। এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের পুনর্গঠন। ৫ আগস্ট আমাদের লক্ষ্য ছিল গণভবন, এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সংসদ ভবন। আমরা গণভবনকে জয় করেছি। এবার আমরা জাতীয় সংসদ ভবনকে জয় করব। ইনশাল্লাহ জাতীয় সংসদে তারুণ্যে অভূতপূর্ণ বিজয় উৎযাপিত হবে সামনের নির্বাচনে।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী ঐতিহ্যের নগরী। রাজশাহী জ্ঞান, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির নগরী। এই পদ্মারপাড়ে রাজশাহী যুগযুগ ধরে টিকে ছিল। আমরা স্মরণ করছি- মজলুম জননেতা মাওলা ভাসানীকে। তিনি এই রাজশাহী শহর থেকে ফারাক্কা লংমার্চ শুরু করেছিল। আমরা ঘোষণা করছি যদি আমাদের নদীর হিস্যা, আমাদের পানির হিস্যা বুঝে নিতে হয়। আমাদের সীমান্তকে রক্ষা করতে হয়- তাহলে আমরা আবারও লংমার্চ শুরু করব, রাজশাহী শহর থেকে।
তিনি বলেন, এই রাজশাহী জেলা ও নগরকে আমরা আবার পুনর্গঠন করতে চাই। এই রাজশাহীর হারানো ঐতিহ্যকে আমরা আবার ফিরিয়ে আনতে চাই। এই রাজশাহীতে কর্মসংস্থান থাকবে, রাজশাহীতে শিক্ষা ও চিকিৎসা থাকবে। রাজশাহীতে শিল্পের বিকাশ ঘটাতে হবে। উন্নয়ন মানে কেবল ঢাকার উন্নয়ন নয়। উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। এটার জন্যই আমাদের সংস্কার, এটার জন্যই আমাদের নতুন দেশ। এটার জন্যই জুলাই পদযাত্রা। আমাদের জুলাই পদযাত্রার বার্তা, আমাদের নতুন দেশ গঠনের বার্তা। দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশের বার্তা।
এসএন