তারেক রহমানকে হতে হবে জনগণের ঐক্যের প্রতীক : জিল্লুর রহমান

জাতীয় ঐকমত্য না হলে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করে লাভ নেই বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেছেন, বিএনপি ও অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে লন্ডনে একটি সম্ভাব্য নির্বাচনী সময় নিয়ে যে সমঝোতা হয়েছিল, তা আপাত দৃষ্টিতে ইতিবাচক মনে হলেও বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। কারণ সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য এখনো অনুপস্থিত। জাতীয় ঐকমত্য না হলে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করে লাভ নেই।

বরং এতে জনগণের বিভ্রান্তি আরো বাড়ে।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিওতে দেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন।

জিল্লুর রহমান বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার লোভ, নতুন দলগুলোর আত্মপ্রকাশ, ছোটদলের কিং মেকার হওয়ার বাসনা সব মিলে এখনকার রাজনীতি অস্থির— এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপির সামনে একটাই রাস্তা খোলা। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপসহীন থাকা।

জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরী হিসেবে তারেক রহমান যদি নেতৃত্বে আসেন, তাহলে তাকে হতে হবে জনগণের ঐক্যের প্রতীক, রাজনৈতিক শুদ্ধতার প্রতিশ্রুতি এবং একটি নতুন দিশার পথপ্রদর্শক। কারণ স্বাধীনতার ঘোষকের প্রতিপক্ষদের কাছে এই নেতৃত্ব কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।

একে ঘায়েল করতে এখন নতুন ভোট ব্যবস্থা অনুপ্রবেশমূলক রাজনৈতিক কৌশল এবং তথাকথিত জাতীয় ঐক্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকা দমন নীতি ব্যবহার হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বিপ্লবীরা আজ বিভক্ত।

কেউ কেউ দলীয় লেজুরভিত্তির শিকার, কেউবা ধান্দাবাজির প্রতিবাদ করে নিজেই ছিটকে পড়েছেন। উমামা ফাতেমার মতো কণ্ঠস্বর এভাবেই প্রমাণ করে দিচ্ছে, যে প্ল্যাটফর্ম থেকে গণ-আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেটি এখন বিকৃত রাজনৈতিক স্বার্থের আঁধার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ছাত্রনেতা অভিযোগ করছেন— তাদের প্রতিশ্রুত ভবিষ্যৎ এখন অন্যদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সিঁড়ি হয়ে উঠেছে।

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, এ বিপ্লবের বর্ষপূর্তি আমরা পালন করছি রাষ্ট্রীয় উৎসবের মতো। অনুষ্ঠান হচ্ছে, ব্যানার-ফেস্টুনে শহীদদের মুখ ছাপা হচ্ছে, স্মৃতিচারণ চলছে, কিন্তু শহীদ পরিবারের কোনো সুনির্দিষ্ট সহায়তা আমরা দেখতে পাই না।

গুম খুনের বিচার নেই। চেতনার ধারক ছাত্ররা এখন দ্বিধান্বিত। প্রশ্ন হচ্ছে— আমরা কি সেই বিপ্লব চেয়েছিলাম? যা শেষে গিয়ে মোহ এবং স্বার্থের মধ্যে ডুবে যাবে, যেখানে নেতৃত্ব নিজের আকাশে উড়বে আর সাধারণ মানুষ তাদের জুতা ও শোক নিয়ে মাটিতে পড়ে থাকবে। তবে এখনো আশা ফুরিয়ে যায়নি। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ ভুলে যায় না। তারা আবারো জেগে উঠতে জানে। শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না।

এমআর/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নারী ছাড়া কোনো আন্দোলন-বিপ্লব সফল হতে পারে না : সামান্তা শারমিন Jul 07, 2025
img
নিবন্ধন পেলে চমক সৃষ্টি করতে চাই : রফিকুল আমিন Jul 07, 2025
img
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রভিশন সংরক্ষণের নতুন নির্দেশনা জারি Jul 07, 2025
img
প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্জী এবার 'গৌরী' চরিত্রে! প্রথম লুক ও টিজার পোস্টার প্রকাশ Jul 07, 2025
img
আমার মেয়ের মনে হয়েছে, মায়ের একজন জীবনসঙ্গী দরকার: বাঁধন Jul 07, 2025
img
এইচএসসি পরীক্ষায় নকলের অভিযোগ, বহিষ্কার ৪৩ শিক্ষার্থী ও ৪ শিক্ষক Jul 07, 2025
img
"আপনারা বেনজীর বা হারুন হবেন না"- ডিসি-এসপিদের হাসনাতের সতর্কবার্তা Jul 07, 2025
img
হংকংকে ৩-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ Jul 07, 2025
img
‘ধুরন্ধর’-এর টিজার, আর তাতেই শুরু হয়েছে চর্চা, তুলনা আর তীব্র উত্তেজনা Jul 07, 2025
img
মুক্তির ৩য় দিনেই অনুরাগের বড় সাফল্য, 'মেট্রো ইন দিনো’ ছাড়িয়ে গেল ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’ কে Jul 07, 2025
‘কালা জাহাঙ্গীর’ চরিত্রে শাকিব! প্রশ্ন নৈতিকতার Jul 07, 2025
img
মঙ্গলবার থেকে ৬ দফা দাবিতে সিলেটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট Jul 07, 2025
img
‘জগ্গা যাসুস’ কেবল ছবি নয়, ছিল রণবীর-অনুরাগের ভালোবাসার এক প্রকল্প Jul 07, 2025
img
১১ বছর বয়সেই বন্ধুর সঙ্গে পালাতে চেয়েছিলেন কাজল! Jul 07, 2025
img
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ ও গুণগত পরিবর্তন ছাড়া কোনো নীতিমালাই কাজে আসবে না: গভর্নর Jul 07, 2025
img
ব্যারিস্টার আনিসুল, রুহুল আমিন ও মুজিবুল হক চুন্নুকে জাপার সকল পদ থেকে অব্যাহতি Jul 07, 2025
img
সৌরভ গাঙ্গুলির বায়োপিকে ডোনা গাঙ্গুলীর চরিত্রে কি মিমি চক্রবর্তী? Jul 07, 2025
img
শাহরুখকে ছাড়া অসম্ভব ‘ডন ৩’, রণবীরকে কি মাশুল দিতে হচ্ছে এই চরিত্রের জন্য? Jul 07, 2025
img
জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশের যুবারা Jul 07, 2025
img
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যাচ্ছেন মালয়েশিয়া, সুযোগ পেলে আটক বাংলাদেশিদের প্রসঙ্গে আলোচনার ইচ্ছা Jul 07, 2025