শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অতীতে ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও টেস্ট কিংবা টি-টোয়েন্টিতে এতদিন অধরাই ছিল। গতকাল আরেকটা আক্ষেপ ঘুচেছে। প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার মাটিতেও যে কোনো ফরম্যাটে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়।
গতকাল (বুধবার) কলোম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কানরা ১৩২ রান সংগ্রহ করে। বল হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন স্পিনার মেহেদী হাসান। ৪ ওভারে ১১ রানে নেন ৪ উইকেট, যা তার ক্যারিয়ারসেরা।
পরবর্তীতে মাঝারি রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২১ বল বাকি থাকতেই ৮ উইকেটের জয় তুলে নেয় লিটন দাসের দল। ব্যাট হাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন তানজিদ হাসান তামিম। ৪৭ বলে ক্যারিয়ার সেরা ৭৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন এই ওপেনার। তিন ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স একটু ফিরে দেখা যাক।
ব্যাটারদের অম্লমধুর পারফরম্যান্স
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি সিরিজে ব্যাটারদের পারফরম্যান্স খুব ভালো ছিল সেটা বলা যায় না। তিন ম্যাচের কোনোটিতেই ধারাবাহিক রান করতে পারেননি কোনো ব্যাটার। বিশেষ করে দলের ওপেনাররা ছিলেন অধরাবাহিক। পারভেজ ইমন প্রথম ম্যাচে ৩৮ রান করার পরের দুই ম্যাচেেই ব্যর্থ। আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম প্রথম দুই ম্যাচে বড় রান করতে না পারলেও শেষ ম্যাচে করেছেন ৭৩ রান। ফলে তিনিও ছিলেন অধারাবাহিক। এদিক লিটন দাসও প্রথম ম্যাচে ছিলেন ফ্লপ৷ পরের দুই ম্যাচে অবশ্য করেছেন যথাক্রমে ৭৬ এবং ৩২। এদিকে শামীম পাটোয়ারী, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজরাও ছিলেন অধারাবাহিক। প্রত্যেক ম্যাচে আলাদা আলাদা ব্যাটার রান করেছেন।
স্পিনারদের দাপট
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সব ম্যাচেই দাপট দেখিয়েছেন স্পিনাররা। বিশেষ করে রিশাদ হোসেন। এ ছাড়া যখন যে স্পিনার সুযোগ পেয়েছেন নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেছেন৷ মেহেদী হাসান মিরাজ কখনোবা শামীম পাটোয়ারীও দলের হয় বল হাতে ভূমিকা রেখেছেন৷ এদিকে গতকাল শেষ ম্যাচে তো একাই লঙ্কান ব্যাটারদের কাঁপিয়ে দিয়েছেন শেখ মেহেদী হাসান।
পেসারদের কনট্রিবিউশন—স্পিনারদের পাশাপাশি বল হাতে অবদান রেখেছেন পেসাররাও। কখনো শরিফুল ইসলাম, কখনো মুস্তাফিজুর রহমান। আবার কখনো বা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দলের পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার লক্ষ্যই দেখা গিয়েছে।
লিটনের রানে ফেরা
দীর্ঘ সময় ধরে সাদা বলের ক্রিকেটে রান করতে পারছেন না লিটন দাস। এরমধ্যে আবার দায়িত্ব পেয়ছেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্বের৷ যে কারণে নিজের রান করাটা আরও বেশি জরুরি ছিল তার জন্য৷ প্রথম ম্যাচে ৬ রানে ফেরার পর ভক্ত-সমর্থকরাও অখুশি ছিলেন তার প্রতি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ৭৬ রান করে নিজেদের সামর্থ্যের জানান দেন তিনি। এরপর গতকাল শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে করেছেন ৩২ রান৷ স্বাভাবিকভাবেই লিটনের ব্যাটে রান করতে দেখাটা স্বস্তির৷
প্রসঙ্গত, সিরিজের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে এবং দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ৮৩ রানে জিতেছিল। এবারের শ্রীলঙ্কা সফরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে এবং তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে শেষটা রাঙাল লিটন দাসের দল।