ফ্রান্সে আরেকটি বিতর্কের মুখে পড়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। এবার রিয়াল মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে—তিনি ফরাসি জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পাঁচজন পুলিশের কাছে বিপুল পরিমাণ ‘ঘোষণাবিহীন অর্থ’ অনুদান দিয়েছেন।
ফরাসি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম Le Canard Enchaîné-এর রিপোর্টে বলা হয়, রিপাবলিকান সিকিউরিটি কোম্পানির অন্তর্ভুক্ত পাঁচজন কর্মকর্তা—যারা ফ্রান্স দলের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন—তারা এমবাপ্পের কাছ থেকে সরাসরি বড় অঙ্কের চেক গ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে চারজন পেয়েছেন ৩০ হাজার ইউরো করে এবং তাদের প্রধান পেয়েছেন ৬০ হাজার ৩০০ ইউরো। সব মিলিয়ে মোট ১ লাখ ৮০ হাজার ৩০০ ইউরো অনুদান দিয়েছেন এমবাপ্পে।
ঘটনাটি নজরে আসার পর ফরাসি জাতীয় পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদারকি সংস্থা General Inspectorate of the National Police (IGPN) আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে। অর্থ পাচার ও কর ফাঁকির বিরুদ্ধে কাজ করা গোয়েন্দা সংস্থা ট্রাকফিনও তদন্তে যুক্ত হয়েছে।
তবে এমবাপ্পে নিজে একটি লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কাতার বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার জন্য প্রাপ্ত পুরো বোনাস অর্থ তিনি ‘নিরাপত্তা দলের সদস্য ও বিভিন্ন সংগঠনকে’ অনুদান হিসেবে দিয়েছেন। তার আইনজীবীর পরামর্শ অনুযায়ী, এ ধরনের অনুদানের প্রাপকদের কর দপ্তরে ঘোষণা দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি।
বিশ্বকাপের সেই আসরে এমবাপ্পে আটটি গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার জিতলেও, শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে টাইব্রেকারে হেরে যায় ফ্রান্স।
যদিও এই অনুদানকে ‘ব্যক্তিগত দান’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন এমবাপ্পে এবং তার লিখিত বিবৃতি তাকে অনেকাংশেই দোষমুক্ত প্রমাণ করতে পারে বলে মনে করছে ফরাসি গণমাধ্যম, তবে তদন্ত প্রক্রিয়া এখনো চলমান।
ফ্রান্সের জনপ্রিয় ফুটবলার হিসেবে এমবাপ্পে বরাবরই খবরের শিরোনামে থাকেন। তবে এবার তিনি আলোচনায় এসেছেন এমন এক ইস্যুতে, যা কর ব্যবস্থাপনা, নৈতিকতা ও আইনি জটিলতার মধ্যে পড়ে যেতে পারে।
ফরাসি আইন অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তাদের এ ধরনের ব্যক্তিগত অনুদান গ্রহণের ক্ষেত্রে রয়েছে কড়া নির্দেশনা ও স্বচ্ছতার দাবি। তাই এমবাপ্পে নির্দোষ হলেও, পুরো প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ব্যাখ্যার দাবি উঠছে দেশজুড়ে।
এখন দেখার বিষয়, আদালতের তদন্ত শেষে এই অনুদান বিতর্ক কোন পরিণতির দিকে যায় এবং তা এমবাপ্পে কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভবিষ্যতে কতটা প্রভাব ফেলে।
এমকে/টিএ