গোপালগঞ্জের ঘটনায় লাভবান হলো কে- প্রশ্ন মাসুদ কামালের

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে সংঘটিত সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক ও বিশ্লেষক মাসুদ কামাল প্রশ্ন তুলেছেন— ‘এই ঘটনায় লাভবান হলো কে? সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক আলোচনায় মাসুদ কামাল বলেন, ‘গোপালগঞ্জের ঘটনায় সেখানকার স্থানীয় জনগণ কোনোভাবেই লাভবান হননি। বরং যারা নির্বাচন পেছাতে চান, যারা অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রাখতে চান, কিংবা যারা আরও প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচন করতে চান— তারা-ই এই ঘটনার মূল বেনিফিশিয়ারি। ’

মাসুদ কামাল বলেন, ‘এনসিপির বর্তমানে ওই এলাকায় সমাবেশ করার যৌক্তিকতা কতটা ছিল। ওই এলাকার পরিবেশ, মানুষের মানসিকতা বুঝে কি এনসিপি তাদের ভাষা ও স্লোগান বেছে নিয়েছিল? উত্তেজনাকর কথা, উস্কানিমূলক স্লোগান আদৌ কি সেখানে প্রয়োজন ছিল? নাকি তারা চেয়েছিল আমরা স্লোগান দিচ্ছি তোমরা আমাদেরকে হামলা করো, তারা কি চেয়েছিল তাদের ওপর যেন গোপালগঞ্জের মানুষ হামলা করে।আর সেকারণেই এ ধরনের স্লোগান বেছে নিয়েছিল।’

মাসুদ কামাল অভিযোগ করেন, গোপালগঞ্জের চার জন নিহত হয়েছে। অথচ সরকার এখনো কোনো মানবিক বিবৃতি দেয়নি। যাদের মারা হয়েছে, তাদের পরিবারকে রাষ্ট্র কি কোনোভাবে দায়িত্ব নেবে?।

পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোর মতো এবারও দায় নির্ধারণ বা উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। নিহতদের মধ্যে পথচারী সাধারণ মানুষও ছিলেন, যাদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের পক্ষ থেকেও এনসিপির ওপর হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। এনসিপি সরাসরি সরকার ও প্রশাসনকে দায়ী করেছে।

বিএনপি ও জামায়াত দায় চাপিয়েছে আওয়ামী লীগের ওপর। অপরদিকে, কিছু বিশ্লেষক হামলার পর ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ’ স্লোগানকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার ‘আমন্ত্রণ’ হিসেবে দেখেছেন।

গোপালগঞ্জের ঘটনাকে ঘিরে কয়েকজন বিশিষ্ট শিক্ষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, এই ঘটনার পর রাষ্ট্রের আচরণ গভীর উদ্বেগজনক।

তারা জানান, সরকার ও পুলিশ সমাবেশে হামলার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিলেও নিহত চারজনের বিষয়ে কোনো মানবিক প্রতিক্রিয়া বা তদন্ত উদ্যোগ দেখা যায়নি।

তারা এটিকে রাষ্ট্রের দায়িত্বহীনতা এবং নাগরিক জীবনের নিরাপত্তার প্রতি অশনি সংকেত বলে আখ্যায়িত করেছেন।

মাসুদ কামাল আবারও প্রশ্ন তোলেন— “ঘটনাটি কার লাভের জন্য ঘটলো? কারা এই উত্তেজনা থেকে রাজনৈতিক বা কৌশলগত সুবিধা পেল?” তিনি বলেন, “অপরাধ বিজ্ঞান বলে, অপরাধের তদন্তে সবচেয়ে আগে দেখতে হয়— কার লাভ হলো? এই ঘটনার বেনিফিশিয়ারি কারা?”

এফপি/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
টাকা নয়, বিবেকের জয়! অটোরিকশায় পাওয়া ১৫ লাখ টাকা ফেরত দিলেন চালক Jul 18, 2025
img
তৈরি পোশাক খাতে কর ছাড়: তুলাসহ কাঁচামালে উৎসে কর শূন্য Jul 18, 2025
img
রংপুরের ‘অর্জন’ ভাস্কর্য থেকে মুজিবের ছবি মুছে দিলেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’ Jul 18, 2025
এই দেশে যত মহান অর্জন, সব বিএনপির হাত ধরেই এসেছে Jul 18, 2025
গোপালগঞ্জে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারফিউ জারি Jul 18, 2025
ছাত্রদলের পক্ষ থেকে যে চ্যালেঞ্জ দিলেন শিবিরকে! Jul 18, 2025
গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ Jul 18, 2025
গোপালগঞ্জে জুলাই যো/দ্ধা/দের উপরে হামলার প্রতিবা/দে বরিশাল জামায়াতের বিক্ষোভ Jul 18, 2025
আমরা মারা গেলে কেউ না কেউ আবার উঠে আসবে: হাসনাত Jul 18, 2025
১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Jul 18, 2025
‘এনসিপির অপরিকল্পিত কর্মসূচির কারনেই ফ্যাসিবাদী শক্তি হামলা করছে’ Jul 18, 2025
গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনা নির্বাচন পেছানোর নতুন ষড়যন্ত্র : ফারুক Jul 18, 2025
img
বিএনপি নেতাকে মালা পরানো সেই পুলিশ কর্মকর্তা গোপালগঞ্জে বদলি Jul 18, 2025
img
মৌসুমী বৃষ্টিতে পাকিস্তান বিপর্যস্ত, বাড়ছে মৃতের সংখ্যা Jul 18, 2025
img
বিচার বিভাগে সংস্কার থামাতে পারে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা: রেফাত আহমেদ Jul 18, 2025
img
সংবিধান হবে বাংলাদেশের সব নাগরিকের : তাসনিম জারা Jul 18, 2025
img
হাসিনা-মুজিবের সংবিধান বাংলাদেশে আর চলবে না : নাহিদ ইসলাম Jul 18, 2025
img
এত ট্রল সামলে লিটনের ছন্দে ফেরা সহজ ছিল না: নাফিস ইকবাল Jul 18, 2025
img
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দাপুটে শুরু, সাউথ আফ্রিকাকে হারাল ১৩০ রানে Jul 18, 2025
img
বৃষ্টি বাঁচাল রংপুরকে? ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর পরিত্যক্ত ম্যাচ Jul 18, 2025