দশ বছর পেরিয়ে গেল, তবু যেন মন ছুঁয়ে থাকা সেই গল্পের আবেদন আজও অমলিন। ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বজরঙ্গি ভাইজান সিনেমাটি কেবল একটি বিনোদনধর্মী ছবি ছিল না, বরং তা হয়ে উঠেছিল এক সামাজিক বার্তা— ভালোবাসা, মানবতা ও করুণার অক্ষয় প্রতীক। এই উপলক্ষে ছবির নির্মাতা কবির খান স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, “এই ছবি শুধু বিনোদন দেয়নি, মানুষকে সারিয়েও তুলেছে।”
ছবির মূল চরিত্রে ছিলেন বলিউড সুপারস্টার সালমান খান। তাঁর সঙ্গে শিশু চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হারশালি মালহোত্রা, আর গল্পকে গভীরতা দিয়েছেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী। এক নির্ভীক, সহজ-সরল হিন্দু ভক্তর চরিত্রে সালমান খান যখন এক বাকরুদ্ধ পাকিস্তানি শিশুকে তার বাড়ি পৌঁছে দিতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন, তখন তার এই মানবিক যাত্রা শুধু পর্দার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি— ছড়িয়ে পড়েছিল দুই দেশের মানুষের হৃদয়ে।
কবির খান বলেন, “এই ছবি ভারতে যেমন দর্শকদের নাড়া দিয়েছে, পাকিস্তানেও মানুষ শান্তি ও আশা খুঁজে পেয়েছেন। রাজনীতি আর বিদ্বেষের ঊর্ধ্বে গিয়ে এই ছবি মানুষের মনের কথা বলেছে।”
বিশাল বক্স অফিস সাফল্য তো ছিলই, তবে তার চেয়েও বড় কথা— এটি হয়ে উঠেছিল এক সাংস্কৃতিক মাইলফলক। এমন এক সময় যখন উপমহাদেশ জুড়ে সম্পর্ক প্রশ্নবিদ্ধ, তখন বজরঙ্গি ভাইজান দেখিয়ে দেয়, ভালোবাসা আর মানবতা কোনো সীমান্ত মানে না।
ছবির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ছিল এর নিঃশব্দ বার্তা— একটি মেয়ে, যে কথা বলতে পারে না, কিন্তু তার চোখে ছিল প্রশ্ন, আশ্রয় আর বিশ্বাসের আকুতি। আর এক মানুষ, যে ধর্ম, জাতি বা দেশের ভেদাভেদ ভুলে, শুধু মানুষের জন্য লড়েছে।
এক দশক পর আজও বজরঙ্গি ভাইজানের আবেদন ম্লান হয়নি। এটি এমন এক ছবি, যা মানুষকে হাসিয়েছে, কাঁদিয়েছে এবং আবারও বিশ্বাস করতে শিখিয়েছে— মানবতা এখনো বেঁচে আছে।
এফপি/টিএ