ছোট শিশু কিংবা কোনও প্রত্যন্ত গ্রাম— সমাজের অবহেলিতদের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহী অনেকেই। কিন্তু বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দিকে নজর যায় ক’জনের? যেখানে নিজেদের সন্তানেরাই বয়সের ভারে নুয়ে পড়া মা-বাবার দায় এড়াতে ঠেলে দেন বৃদ্ধাশ্রমে, ঠিক সেই সময় এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন দক্ষিণী সুপারস্টার রামচরণের স্ত্রী উপাসনা কোনিদেলা।
‘বিলিয়ন হার্টস বিটিং’ নামে এক মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমে গোটা ভারত জুড়ে ১৫০টিরও বেশি বৃদ্ধাশ্রম দত্তক নিয়েছেন উপাসনা। শুধু কাগজে-কলমে দত্তক নেওয়া নয়, ওই আবাসিক বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতেও নিজে তদারকি করছেন তিনি। তার স্পষ্ট ভাষায়— “জীবনের এই শেষ পর্যায়ে ওঁদের একটাই চাওয়া— একটু সম্মান, একটু যত্ন। আমি সেটাই দিতে চাই।”
সমাজসেবার সঙ্গে উপাসনার সংযোগ নতুন নয়। এত দিন তিনি কাজ করে এসেছেন নারী ও শিশুদের জন্য। এবার তার মানবিক নজর পড়েছে এমন এক প্রজন্মের দিকে, যাঁরা একসময় ছিলেন কারও মা-বাবা, কিন্তু এখন পরিবারের চোখে ‘অতিরিক্ত বোঝা’। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উপাসনা জানান, “আমার দত্তক নেওয়া প্রতিটি বৃদ্ধাশ্রম যাতে মানবিক পরিবেশে পরিচালিত হয়, সেই দিকেও আমার কড়া নজর থাকবে।”
শুধু আবাসিক সুবিধা নয়, বর্ষীয়ানদের মনোবল ঠিক রাখতেও নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। প্রতিটি বৃদ্ধাশ্রমে বিনামূল্যে ওষুধ, নিয়মিত চিকিৎসা, পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি থাকবে সাংস্কৃতিক উদ্যাপনের ব্যবস্থা। উৎসব কিংবা বিশেষ দিনগুলোয় যাতে ওই প্রৌঢ়-প্রৌঢ়ারাও অংশ নিতে পারেন, তার জন্য থাকবে আলাদা আয়োজন।
সবচেয়ে বড় কথা— উপাসনা এই বৃদ্ধাশ্রমগুলিকে শুধুই দাতব্য প্রকল্প হিসেবে দেখছেন না। বরং সমাজের সেই অভিভাবকদের সম্মানের সঙ্গে শেষ জীবন কাটানোর জন্য গড়ে তুলছেন এক পরম আশ্রয়।
এই সময় যখন সন্তানরাই মুখ ফিরিয়ে নেয়, তখন উপাসনার এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এক সাহসী বার্তা— "বয়স যতই হোক, ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার কখনও ফুরায় না।"
এসএন