কারাগার পরিদর্শনে কোন ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ দেবেন না ধর্ম উপদেষ্টা

সম্প্রতি চট্টগ্রাম কারাগার পরিদর্শন করেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। তবে পরিদর্শনের ছবি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাইরে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এ বিষয়ে এক পোস্টে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তিনি জানান, দেশের ৭০ হাজার বন্দিকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার আওতায় তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি মানবিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সেখানে পরিদর্শনে যান।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য বিকৃতির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান’ শিরোনামে তিনি এক পোস্টে এসব কথা বলেন।

পোস্টে ধর্ম উপদেষ্টা লেখেন, সম্প্রতি আমি চট্টগ্রাম কারাগার পরিদর্শন করি, যেখানে আমার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডিআইজি প্রিজন ও ডেপুটি জেলার। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ, ধর্মীয় বই পুস্তক এবং নামাযের স্থান নির্ধারণের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ইসলামী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ধর্মীয় শিক্ষার প্রচার এবং নৈতিকতা ও মূল্যবোধের শিক্ষাদান করা হতো, যা বন্দি সমাজের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ।

আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে দেশের ৭০ হাজার বন্দিকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার আওতায় আনার, যা একটি বৃহৎ মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সফরের সময় আমি রান্নাঘর, দুপুরের খাবার, হাসপাতাল, পুরুষ, মহিলা, শিশু ওয়ার্ডসহ সকল স্থানে পরিদর্শন করেছি। এ ছাড়া ভিআইপি বন্দীদের ওয়ার্ড এবং ফাঁসির মঞ্চও পরিদর্শন করি। পরিদর্শনকালে আমার সঙ্গে কোনো ক্যামেরা ছিল না, তবে কারা কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা কিছু ছবি তুলেছিলেন, যা পরবর্তীতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাইরে পাচার করা হয়েছে। এটি ছিল একটি অবৈধ প্রচারণা, যা ভুল তথ্য পরিবেশন করেছে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কারা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে, যা প্রশংসনীয়।

এই সফরটি ছিল সম্পূর্ণ সরকারি এবং মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশে আয়োজিত। পরিদর্শন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট আইজি প্রিজন, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং অন্য কর্মকর্তাদের অফিসিয়ালি জানানো হয়েছিল। এখানে কোনো ধরনের গোপনীয়তা বা লুকোচুরি ছিল না। সফরের সময় আমি ভিআইপি ওয়ার্ডে মাত্র দুই বা তিন মিনিট ছিলাম, এবং সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তারা আমার সঙ্গী ছিলেন। তবুও এই সংক্ষিপ্ত সময়ে উপস্থিতি থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিকৃত তথ্য রটানো হচ্ছে, যা মূলত একটি কায়েমি সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্রের অংশ।

এই প্রচারণা মূলত পরাজিত শক্তির অব্যাহত ষড়যন্ত্রের ফলস্বরূপ। যারা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত, তাদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ আসছে, যা সরকারের শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সমৃদ্ধি অর্জনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য নিয়ে করা হচ্ছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকার এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধতাকে ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু তারা এতে সফল হবে না। আমাদের প্রচেষ্টা সবসময় দেশের কল্যাণ এবং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা, এবং সত্যের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

অতএব, আমি বিনম্রভাবে বলতে চাই, এসব অপপ্রচার অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য। এর পেছনে থাকা পরাজিত শক্তির উদ্দেশ্য হল সরকার এবং জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা, কিন্তু আমরা জানি, সত্যের বিজয় অনিবার্য। আমরা আমাদের গঠনমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাব, এবং কোনো ভুল-বোঝাবুঝির সুযোগ দেব না।

ইউটি/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
এশিয়া কাপে ‘বি’ গ্রুপে জায়গা পেল বাংলাদেশ Jul 26, 2025
সন্তানকে সময় দিতেই আমেরিকায় এক হচ্ছেন শাকিব-বুবলী Jul 26, 2025
গ্ল্যামারের আড়ালে অন্ধকার! আলোচিত ৭ অভিনেত্রীর চাঞ্চল্যকর কাহিনী Jul 26, 2025
আরবি ও ইসলাম শিক্ষা নিচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা Jul 26, 2025
img
দল নিয়ন্ত্রণ করেছি দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারব : ডা. শফিকুর রহমান Jul 26, 2025
img
সৌদি আরবের কেনা ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলকে দেওয়ার অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের, প্রত্যাখ্যান করে কিসের ইঙ্গিত দিল রিয়াদ Jul 26, 2025
img
‘টাকার বিনিময়ে কোথাও যাইনি, গাড়িতে ধরা খেয়েছি এটা কেমন টপিক’ Jul 26, 2025
img
১৫ বছর পর অষ্টম শ্রেণিতে ফের চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা Jul 26, 2025
img
ফিলিস্তিনকে এখন স্বীকৃতি দিলে ‘হিতে বিপরীত’ হতে পারে, মন্তব্য ইতালির প্রধানমন্ত্রীর Jul 26, 2025
img
মাইলস্টোনের ঘটনায় বার্সেলোনার পর শোক জানালো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড Jul 26, 2025
img
জুলাই শহীদ পরিবারের জন্য ৮০৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প একনেকে উঠছে কাল Jul 26, 2025
img
ম্যাচ রেফারি হওয়ার আবেদনে সাড়া দিলেন না রিয়াদ Jul 26, 2025
img
জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 26, 2025
img
আগে ঘুষ দিতে হতো ১ লাখ টাকা, এখন দিতে হয় ৫ লাখ: মির্জা ফখরুল Jul 26, 2025
img
মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ১১ জনকে পুশইন Jul 26, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হেফাজত নেতাদের সাক্ষাৎ Jul 26, 2025
img
বিভাজনের রাজনীতি চায় না জামায়াত : সেলিম Jul 26, 2025
img
গ্রিন শিপইয়ার্ড না হলে জাহাজভাঙা কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা Jul 26, 2025
সজীব ওয়াজেদ জ য়কে সভাপতি করে দল পুনর্গঠনের পথে আ. লীগ Jul 26, 2025
নিম্নচাপের কারণে বরিশালে অস্বাভাবিক জোয়ার Jul 26, 2025