চোট আর নেইমার দুটি শব্দ যেন এখন সমার্থক। ক্যারিয়ারের বড় একটা সময়ই চোটের কারণে মাঠের বাইরে কেটেছে এই ব্রাজিলিয়ান তারকার। মাঠে ফিরলেই তাই নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করছেন, তবু বারবার ইনজুরি যেন তার পথের সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আল হিলাল ছেড়ে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরে নতুন করে শুরু করতে চেয়েছিলেন নেইমার। স্বপ্ন ছিল এখান থেকেই ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায় রাঙানোর। তবে সেই স্বপ্নের পথেও থমকে দাঁড়িয়েছে চোট। চলতি মৌসুমে ব্রাজিলের শীর্ষ লিগে সান্তোসের হয়ে খেলেছেন মাত্র ৭ ম্যাচ। চোট ও ফিটনেস জটিলতায় অধিকাংশ ম্যাচেই দল তাকে পায়নি। আর নেইমারবিহীন সান্তোসও ছন্দে নেই, ১৭ ম্যাচে মাত্র ৪ জয় নিয়ে দলটি অবস্থান করছে অবনমন অঞ্চলে।
তবে এখনো শেষ হয়নি তাদের লড়াই। চলতি মৌসুমে ২১টি ম্যাচ বাকি রয়েছে সান্তোসের, যার মধ্যে ২০২৫ সালের আগস্ট মাসেই রয়েছে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। এই পাঁচ ম্যাচের একটি শীর্ষে থাকা ক্রুজেইরার বিপক্ষে, তাই প্রতিটি ম্যাচই হবে বাঁচা-মরার লড়াইয়ের মতো।
গত ২৪ জুলাই ইন্তারনাসিওনালের কাছে ২-১ গোলে হেরে অবনমন অঞ্চলে নেমে গেছে সান্তোস। ঘরের মাঠে ম্যাচটির প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে দলটি। যদিও যোগ করা সময়ে আলভারো বারিয়ালের একমাত্র গোলে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় তারা। ম্যাচের শেষদিকে বাঁ পায়ে দুর্দান্ত শট নেন নেইমার, বল পোস্টে লেগে ফিরে এলে গোলরক্ষক সার্জিও রোচেত বল গ্লাভসে আটকান।
নেইমারের দাবি, বল গোললাইন পেরিয়ে গিয়েছিল এবং সে অনুযায়ী বাঁধনহারা উদযাপনেও মেতে ওঠেন তিনি। কর্নার ফ্ল্যাগে লাথি, জার্সি খুলে উদযাপন সবই চলছিল, কিন্তু রেফারি লুকাস পাওলো তোরেজিনের মতে বল গোললাইন অতিক্রম করেনি। তাই খেলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। হতাশ নেইমার রেফারির সিদ্ধান্তে প্রবল আপত্তি জানান।
খেলার শেষ বাঁশি বাজার পর হতাশা চরমে ওঠে নেইমারের। মাঠ ছাড়ার সময় গ্যালারির কাছে গিয়ে এক সমর্থকের সঙ্গে তর্কে জড়ান তিনি। ব্রাজিলের ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘প্লানেতা দো ফুটবল’ জানায়, এক দর্শককে উদ্দেশ্য করে নেইমার বলেন, ‘পারলে এখানে আয়, না হলে গোল্লায় যা!’ পরে অবশ্য সতীর্থ গোলকিপার জোয়াও পাওলো তাকে সরিয়ে নিয়ে যান এবং পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মাঠে পারফরম্যান্সেও নেইমার এখনো নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। চলতি মৌসুমে সান্তোসের হয়ে ৭ ম্যাচে করেছেন মাত্র ১টি গোল। যদিও সমস্ত প্রতিযোগিতা মিলিয়ে (পাওলিস্তা চ্যাম্পিয়নশিপসহ) ১৫ ম্যাচে তার গোল ৪টি, সঙ্গে রয়েছে ৩টি অ্যাসিস্ট।
নেইমারের ফর্ম, সান্তোসের অবনমন শঙ্কা, আর বিতর্কিত মুহূর্ত সবমিলিয়ে ২০২৫ সালের আগস্টে নেইমারদের জন্য অপেক্ষা করছে এক কঠিন পথচলা। এখন দেখার বিষয়, চোট ও চাপ সামলে শেষ পর্যন্ত কতটা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন ব্রাজিলের সাবেক এই অধিনায়ক।
কেএন/টিকে