তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক সংঘাতের সম্ভাবনার কথা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিল যুক্তরাজ্য। সম্প্রতি এক ঘোষণায় ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা সচিব জন হেইলি বলেন, প্রয়োজনে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে শান্তি নিশ্চিত করা হবে, এবং এই যুদ্ধে যুক্তরাজ্যের পাশে থাকবে অস্ট্রেলিয়াও।
তাইওয়ান সম্প্রতি ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ সামরিক মহড়ার আয়োজন করে। মহড়ায় শহরের সড়কজুড়ে দেখা যায় আমেরিকার তৈরি হাই-মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (HIMARS)। এর মাধ্যমে তাইওয়ান স্পষ্ট বার্তা দেয় তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এখনো পর্যন্ত সরাসরি চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ায়নি, তবে যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক ঘোষণায় চীন-পশ্চিম সম্পর্ক নতুন উত্তেজনার মুখে পড়েছে।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা সচিব জন হেইলি অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় বলেন, চীনের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়লে সামরিক পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না ব্রিটেন। এসময় তিনি জানান, ব্রিটিশ বিমানবাহী রণতরী এইচএমএস প্রিন্স অফ ওয়েলস এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানে সজ্জিত হয়ে বর্তমানে প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থান করছে। তিন দশকের মধ্যে এই প্রথম ব্রিটিশ স্ট্রাইক গ্রুপ ওই অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। তারা জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দরও পরিদর্শন করেছে।
তিনি আরও জানান, যদি যুদ্ধ শুরু হয়, তবে অতীতের মতো যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া একসঙ্গেই লড়বে। দুই দেশ ইতিমধ্যেই যৌথ সামরিক অনুশীলন করে এসেছে এবং ভবিষ্যতে একত্রেই চীনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তাইওয়ান প্রণালীতে ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ টহল দেওয়ায় সম্প্রতি চীন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায়। তারা একে ইচ্ছাকৃত উসকানি বলে মনে করছে। যদিও ব্রিটিশ নেভির দাবি টহল কার্যক্রমটি আন্তর্জাতিক আইন মেনেই এবং পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই পরিচালিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, চীন বরাবরই তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে। প্রয়োজনে সামরিক শক্তি ব্যবহার করে দ্বীপটিকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার হুমকি দিয়ে আসছে বেইজিং। পশ্চিমা দেশগুলোর তাইওয়ানকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহে চীন দীর্ঘদিন ধরেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছে। এর ফলে চীন ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে।
পিএ/টিএ